রংপুরে গণসমাবেশ সফল করতে তিনদিন আগেই হাজির বিএনপি সমর্থকরা

সাইফুল ইসলাম মুকুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর: চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় গণসমাবেশের পর বিএনপির নজরে এবার উত্তরের জেলা রংপুর।

আগামী ২৯ অক্টোবর রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দিন ধার্য রয়েছে। এ উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নানা প্রস্তুতিও নিতে দেখা গেছে। এরইমধ্যে পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি মাথায় রেখে অনেকেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরে পৌঁছেছেন রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের দলনেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা নাকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় খেলা দেখাবেন। আমরা তো খেলা দেখছি। আগামী ২৯ অক্টোবর রংপুরে আমরাও খেলা দেখাবো। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ হবে এদিন। যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে যে, সারাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রাম থেকে সমাবেশস্থলে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও রহিদুল ইসলাম। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ট্রেনে করে পাটগ্রাম থেকে রংপুর স্টেশনে এসে পৌঁছান তারা। স্টেশনে রাতযাপনের পর বৃহস্পতিবার সকালে এসেছেন সমাবেশস্থলে।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাস বন্ধের আশঙ্কা থেকে তিনদিন আগেই প্রায় শত কিলোমিটার দূর থেকে রংপুরে এসেছেন। তার সঙ্গে প্রতিবেশী ভাতিজা রহিদুলও এসেছেন।

তিনি আরও জানান, স্টেশনে চিড়া-মুড়ি খেয়ে রাতযাপনের পর বৃহস্পতিবার সকালে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। সঙ্গে কম্বলও এনেছেন। ২৯ অক্টোবর সমাবেশ শেষে বাড়ি ফিরবেন।

রহিদুল বলেন, চিড়া-মুড়ি খেয়ে হলেও থাকবো। রাতে মঞ্চের আশপাশে কম্বল বিছিয়ে ঘুমাবো। এরইমধ্যে তাদের সহযোগীরা বাড়ি থেকে রওয়ানা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, মোস্তাফিজুর ও রহিদুলের মতো গাইবান্ধার ফুলছড়ি থেকে বুধবার রাতেই এসেছেন এনামুল হক। বৃহস্পতিবার সকালে সমাবেশস্থল কথা হয় তার সঙ্গে। এনামুল জানান, বুধবার রাতে ফুলছড়ি থেকে রংপুরে এসেছেন। সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি রংপুরেই অবস্থান করবেন।

এদিকে, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে এখনো পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করা না হলেও আশঙ্কা করছেন নেতারা। এ বিষয়ে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামু বলেন, এখন পর্যন্ত ধর্মঘটের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জেনেছি। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের আটক বা গ্রেফতার করা না হলেও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নেতাকর্মীদের বিষয়ে খোঁজ করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজ করছেন এমন অভিযোগ এনে হারুন অর রশীদ বলেন, কোনো ধরনের হয়রানি বা চক্রান্ত করে এই সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। ধর্মঘট দিয়ে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা না হয় এজন্য পরিবহন মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আগামী ২৯ অক্টোবরের গণসমাবেশ উপলক্ষে এরইমধ্যে জেলা-উপজেলায় প্রস্তুতি সভা করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিভাগের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে চলছে লিফলেট বিতরণসহ নানা প্রচারণা। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। রংপুরের ঐতিহাসিক কালেক্টরেট মাঠে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *