সোহেল রানা। প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা- সব ক্ষেত্রেই সফল তিনি। পৌনে তিনশত ছবিতে অভিনয় করেছেন। ৩৫টি ছবি প্রযোজনা এবং অর্ধশত ছবি পরিচালনা করেছেন। যদিও তার নায়ক খ্যাতির আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে প্রযোজক, পরিচালক পরিচয়। স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
চলচ্চিত্রের এই জীবন্ত কিংবদন্তি সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের মুখোমুখি হন। স্মৃতিচারণ করেন প্রয়াত বন্ধুকে নিয়ে।
সদ্য প্রয়াত পরিচালক আজিজুর রহমান বুলির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কী আর বলব? কিবা বলার আছে? ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কোনো ভাষা নেই। কোনো অনুভূতি নেই। কেমন যেন পাথর হয়ে গেছি। সবকিছু কুয়াশার মতো লাগছে। বুলির মৃত্যুর খবর শোনার পর সত্যি মন ভালো নেই।’
‘বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে হয় না, কারো কারো সঙ্গে হয়। আজিজুর রহমান বুলি ছিলেন তেমনই ভালো বন্ধু। গভীর বন্ধুত্ব ছিল তার সঙ্গে। এরকম বন্ধু এ জীবনে আর হবে না। বন্ধু বলতে আমার কেউ রইল না। খুব একা হয়ে গেলাম। বড় একা হয়ে গেলাম,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ভয় লাগছে। অনেক ভয় লাগছে। কতজনকে হারিয়েছি। কত চেনা মানুষ চিরদিনের জন্য চলে গেছেন। যারা চলে যায় তারা আর আসে না। বুলিও আসবে না। ওর মুখটা বার বার চোখে ভাসছে। ৫০ বছর আগের কোনো স্মৃতিই আর মনে করতে পারছি না। ওর পরিচালিত ও প্রযোজিত সিনেমার নামও এখন মনে পড়ছে না।’
সোহেল রানা বলেন, ‘জোর দিয়ে বলতে পারি বুলির মতো ভালো মনের মানুষ চলচ্চিত্রে আর দ্বিতীয়জন পাইনি। আর দেখব বলে মনে হয় না। সবসময় হাসিখুশি থাকতে ভালোবাসতো। রাগী চেহারার বুলিকে কখনো দেখিনি। ওর হাসিমুখটা অনেকদিন মনে থাকবে। আড্ডার স্মৃতির শেষ নেই। দিন রাত আড্ডা দিয়েছি একসঙ্গে। বুলির ভেতরে চলচ্চিত্রকে অনেক ওপরে নিয়ে যাওয়ার একটি ভাবনা সবসময় খেলা করত। সৃষ্টির নেশায় থাকত। যার জন্য এতগুলো সিনেমা করতে পেরেছিল।’
‘ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি আমি। দুই চোখ বেয়ে সমানে অশ্রু ঝরছে। আর কথা বলতে পারছি না। বুলি যেন শান্তিতে থাকে। এটুকুই আল্লাহর কাছে চাওয়া।’