গত ২৪ অক্টোবর ছিলো ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির জন্মদিন। এদিন ৩০-এ পা রেখেছেন তিনি। প্রতি বছরই ধুমধাম করে নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করেন ঢালিউডের ‘স্বপ্নবাজ’ এই নায়িকা। সেই অনুষ্ঠানের রেশ ছড়িয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে, তার ভক্ত-শুভাকাঙক্ষীদের মনেও।
এবার পায়রার সাজে জন্মদিনের কেক কাটেন পরী। এদিন রাত ৮টায় রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে তার জন্মদিন পালনের জমকালো আয়োজন করা হয়। তবে বৃষ্টির কারণে ২ ঘণ্টা বিলম্বে অনুষ্ঠান শুরু হয় রাত সাড়ে ১০টায়।
এবারও আয়োজনে কমতি ছিল না। তবে একটু ভিন্নতা ছিল। আয়োজনে বেশ কিছু চমকের মধ্যে অন্যতম হলো পরীর জীবন পরিবর্তনভিত্তিক ডকুমেন্টারি ‘নতুন জন্মের গল্প’ প্রদর্শন।
১২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড ব্যাপ্তির ‘নতুন জন্মের গল্প’তে রাজের সঙ্গে দেখা হওয়া থেকে শুরু করে রাজ্যের জন্ম পর্যন্ত নানা সময়ের ঘটনা উপস্থাপন করেছেন পরীমণি।
শুরুতেই পরী বলেন, ‘এই গল্পটা শুধুই আমার ছিলো। এক দুরন্ত পরীর। সে শুধু উড়ে বেড়াতো স্বপ্ন-কল্পনার এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে। ডুবে থাকতো বন্ধু, আড্ডা, ফ্যাশন, গ্লামার, ফ্যান ফলোয়ার্স আর সিনেমার পর্দায় নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কারের নেশায়। শুধু কি পর্দায় জীবনও যে তার কম নয়। কিন্তু জীবনের এই সময়টাতে আমার রিয়েল হিরোটা কই সেটাই খুঁজছিলাম। ভাবতাম, কোনো এক গুণিন এসে হাতের রেখা গুনে যদি বলে দিতো, জীবনের এই পথটাকে খুঁজে দিতো। কোথায় যাচ্ছি আমি। কিন্তু প্রমিজ ছিলো, আর কোনো ভুল মানুষের কাছে যাবো না।’
আমার ওস্তাদ গিয়াসউদ্দিন সেলিম। যিনি আমার জন্য এক গুণিন নিয়ে এলেন। আমি মুখোমুখি হলাম সাদা পাঞ্জাবি পরা (শরিফুল রাজ) দুরন্ত যুবকের। কেনো এমন লাগলো তাকে দেখে। এ অস্তিরতার নাম কি। এই বলে স্বামী শরিফুল রাজের সঙ্গে প্রেমর গল্প বলেন পরী।
পরীর ভাষায়, গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘গুণিন’ সিনেমার লুক টেস্ট। সেখানেই এই পাগলটা ছিলো। আমাদের রিহার্সালের জন্য আমাদের ডাকা হলো। দ্বিতীয় দিন আমার বাড়িতে তার সঙ্গে দেখা হয়। রাজের হাত ভাঙ্গা ছিলো। খাবার টেবিলে দেখলাম রাজ বাম হাত দিয়ে খাচ্ছে। তখন আমি ওকে খাইয়ে দিলাম। তখন থেকেই ওর জন্য মায়া লাগা শুরু গেছে। এরপর শুটিং আমাদের প্রেম। ওস্তাদও বিষয়টি মেনে ছিলেন…………। শুটিং থেকে ফিরে রাজ তার মাকে আমার বিষয়ে জানালো। মাও বিষয়টি মেনে নিলেন। এরপর সবার আড়ালে আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।’
মা হওয়ার জার্নিটা পরীর জন্য সহজ ছিলো না। সেটাও উঠে এসেছে ভিডিওতে। বললেন, ‘এই সময়টা আমাকে পূর্ণাঙ্গ সাপোর্ট দিয়েছে রাজ…..। এখন আমাদের ঘরে এসেছে রাজ্য। এটা আমাদের একটা নতুন জন্ম। ঘুমের মধ্যে ওদের দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। সম্পূর্ণ নতুন চরিত্রে আমরা ডুবে আছি। রাজ্যের মধ্যে কখনো রাজকে দেখি, আবার কখনো আমাকে। তার নিজস্ব কিছু ভঙ্গিমা আছে। আমার জন্য তার অদ্ভুত মায়া তৈরি হচ্ছে। আমি টের পাই। ওর সঙ্গে জড়াজড়ি করে থাকি। এই জন্মদিন তাই আমার জন্য নতুন এক গল্প। মা পরীর প্রথম জন্মদিন।’
জন্মদিনে পরীমণি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার একটা বছরের জার্নিতে রাজ ছায়ার মতো যেভাবে আমাকে আগলে রেখেছিল তার জন্য তাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় নাই। তাই ঘটা করে তাকে ধন্যবাদ দিতেই এই আয়োজন করেছি।’
সংসার জীবন কেমন লাগে জানতে চাইলে পরীমণি বলেন, ‘যদি সুখ থাকে তাহলে সংসার জীবন স্বর্গের মতো।’ পরীর কথা কেটে নিয়ে রাজ পরীকে চুমু খেয়ে বলেন, ‘সংসার জীবন এমন লাগে।’
এদিকে পরীর উদ্দেশে রাজের না বলা কথাগুলো জানতে চাইলে রাজ বলেন, ‘জীবনের এই পর্যায়ে এসে পরীর জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি আমি আর রাজ্য। রিয়েলি শি ইজ গুড ওয়াইফ। আর না বলা কথাগুলো সবার সামনে না বলে এভাবে পরীমণির হাত ধরে না বলা প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে চাই। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’