‘টিয়ার গপ্পো’ বা ‘সেলাই জীবন’ কিংবা ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’ বানিয়ে হাত পাকিয়েছেন তরুণ নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি। এবার পুরোদমে নেমে পড়লেন নিজের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র নির্মাণে!
কাহিনীর প্রয়োজনেই বিরাট বহর নিয়ে গত ১৩ তারিখ থেকে শুটিং করছেন রাজধানী শহর থেকে বহু দূরে, দুর্গম অঞ্চলে। তার প্রথম সিনেমার নাম ‘নয়া মানুষ’।
ছবিটি বাংলাদেশের চর এলাকার মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি। এতে জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ সুজলার চরিত্রে অভিনয় করছেন। তার বিপরীতে অভিনয় করছেন অভিনেতা রওনক হাসান। প্রখ্যাত নাট্যকার মাসুম রেজা ছবিটির দৃশ্যপট রচনা করেছেন।
জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর থেকে মৌসুমীসহ ৬৫ জনের টিম নিয়ে চাঁদপুর মেঘনার বাঁকে দুর্গম এক চরে ক্যাম্প গড়েন নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি। ১০ দিন শুটিং শেষে মৌসুমী সেখান থেকে ঢাকায় ফেরেন ২৩ অক্টোবর রাতে, ঝড়ের মুখে।
ছবিটির গল্প নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত মৌসুমী। তার ভাষায়, ‘শুধু এই গল্পটার জন্যই এতোটা দুর্গম চরাচরে এসে কষ্ট করেছি। শুধু দুর্গমই নয়, এরসঙ্গে যুক্ত হলো ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। গত তিনদিন ধরে বৃষ্টি-মেঘ সেই চরে। ২৩ তারিখ তো ২৪ ঘণ্টাই ঝরলো বৃষ্টি। এরমধ্যে গোটাদিন আমি আর ঊষশী ভিজে ভিজে শুটিং করেছি।
গতকাল (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে দেখছিলাম অদ্ভুত আরেকটি ঘটনা। দেখেছি নদীর পানি বেড়ে পুরো চরটা ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে। তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছে সেখানে। এ এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। এরমধ্যেও আমরা শুটিংটা করে গেছি ভিজে ভিজে ভয়ে ভয়ে। সন্ধ্যায় শেষ করেছি। শুরু হলো তুমুল ঝড়-বাতাস। তার মধ্যেই মাইক্রোতে চেপে কাঁপতে কাঁপতে ঢাকায় ফিরেছি।’
চরে ১০ দিনের কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, ‘অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিলো। যেটা কম-বেশি সব কাজেই থাকে। তবে প্রতিবন্ধকতা ইউনিট ছাপিয়ে যখন প্রকৃতি পর্যন্ত গড়ায়, সেটা সামাল দেওয়া কঠিন। আশার কথা সব ছাপিয়ে, ফ্যান্টাসটিক কাজ করেছি টানা ১০টা দিন। গল্পটার। মাটির গল্প। সিনেমাটা নিয়ে আমাদের অনেক একসাইটমেন্ট। এটা করার একটাই কারণ গল্প। এটা ধর্ম-বর্ণ সব ছাপিয়ে কিছু ঘরপোড়া মানুষের গল্প। যে মানুষগুলোর মধ্যে আমি নিজেকেও খুঁজে পাই। সেজন্যই, সব প্রতিবন্ধকতা সামলে কাজটি করছি।’