শরৎ শেষ না হতেই উত্তরের জেলা পঞ্চগড় ও দিনাজপুরে কড়া নাড়ছে শীত। গত কয়েক দিনে এ জনপদে সকালের কুয়াশা জানান দিচ্ছে ঋতুচক্রে হেমন্তের আগেই শীতের আগমন বার্তা।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রকৃতিতে চলছে আবহাওয়ার স্বাভাবিক পালাবদল। মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার সময় বাতাসের গতি-প্রকৃতির পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, আজ থেকে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির প্রবণতা তিন দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় নিম্নচাপ ছাড়া আর বর্ষাকালের মতো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না থাকলেও সারা দেশের তাপমাত্রায় তেমন হেরফের হবে না। আর চলতি মাসেই নামতে পারে শীত।
গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তরে দিনে গরম ও রাতে হালকা ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে চারপাশ। আলো জ্বেলে চলছে যানবাহন। ঘাসের ডগা ও ধানের পাতায় জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। গতকালও প্রভাতে পঞ্চগড় ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল।
গত তিন দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে তেঁতুলিয়ায়-২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দীর্ঘ সাড়ে চার মাস দেশে মৌসুমি বায়ু অবস্থান করেছে। এ সময়টা মূলত বর্ষাকাল। তবে এবছর বর্ষায় দেশ জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসের গতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চলতি মাসের শেষ দিকে দেশের উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে, অনুভূত হবে শীত মৌসুম। তবে রাজধানীসহ বড় বড় শহরগুলোতে শীত পড়তে সময় লাগে বলে জানিয়েছেন তারা।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তারা বলেন, যানবাহন ও জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে শহরের তাপমাত্রা তুলনামূলক সবসময় একটু বেশিই থাকে। তবে এবারও গত বছরের মতো শীত আসছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, আমাদের দেশের গ্রামগুলোর তুলনায় শহরের জনসংখ্যা বেশি। সেখানে যানবাহন চলাচল, শিল্পকারখানার কারণে তাপমাত্রা সবসময় তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। এ অবস্থায় গ্রামে শীত পড়লেও শহরে শীতের প্রভাব পড়তে সময় লাগে। এ ছাড়া বাতাসের পরিবর্তন শুরু হয় উত্তরাঞ্চল হয়েই। এ কারণে ঐসব এলাকায় আগেই শীত পড়ে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।