বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম স্মরণীয় নায়ক সালমান শাহ। ২৫ বছরের জীবদ্দশায় মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে তিনি যতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, তা যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। এত অল্প সময়ে সুপারস্টার হওয়ার নজির নেই কারও।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর অকাল মৃ’ত্যুর পর ঢালিউডে অনেক নায়ক এসেছেন। জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন। কিন্তু তার মতো আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা কেউ পাননি। তবে এক যুগ পর উত্থান হয় শাকিব খানের। দেশ পায় আরও এক সুপারস্টার। অনেক পরিচালকের মতে, সালমানের জনপ্রিয়তাকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু তেমনটাই মনে করেন। তিনি বলেন, ‘সালমান শাহ খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন। এতো তাড়াতাড়ি কোনো হিরো জনপ্রিয় হতে পারেনি। সবাই তাকে পছন্দ করে ফেলেছিলেন। মান্নাও জনপ্রিয় হয়েছিলেন। কিন্তু তারও সময় লেগেছিল। তবে সালমানের থেকে শাকিব খান বেশি নাম করেছেন। সময় পেয়েছেন বলে নাম করতে পেরেছেন। সালমান সময় পাননি। আল্লাহ তাকে নিয়ে গেছেন। তাই বলে আমি সালমানকে ছোট করছি না।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় অবস্থিত নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড় ছিলেন। ছোটবেলায় তিনি ছিলেন গায়ক। ইমন নামে অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন সালমান শাহ। এই সিনেমার আকাশচুম্বী সাফল্য তাকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দেয়।
পরবর্তী তিন বছরে তিনি মোট ২৭টি সিনেমায় কাজ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হলো-‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখি’, ‘বিক্ষোভ’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আশা ভালোবাসা’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নাই’, ‘জীবন সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘স্বপ্নের নায়ক’ ইত্যাদি।