নজর২৪ ডেস্ক – কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের এক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে কবরস্থান উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উঠেছে।
পাশাপাশি পরিবারটির বিরুদ্ধে দুস্থ না হয়েও দুস্থদের জন্য সরকারি অর্থও আত্মসাতেরও অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতার দাপটে পরিবারটি সরকারি নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করেই নামসর্বস্ব কবরস্থান দেখিয়ে কমিটির রেজুলেশন করে উক্ত টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, কটিয়াদীর মুমুরদিয়ার ১নং ওয়ার্ডে কয়েকবছর আগে জান্নাতুল বাকী নামক কবরস্থানের জন্য ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা বরাদ্দ দেয় ধর্ম মন্ত্রনালয়। খোকন ভূঞাঁ ও শাহজাহান ভূঞাঁ (উভয়ের পিতা মতি মিয়া ও মাতা আনোয়ারা বেগম) কবরস্থানের নামে টাকা আত্মসাত করেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও দুস্থ না হওয়া সত্বেও ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অনুদান শাখা থেকে অসংখ্য টাকা আত্বসাতের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এতে প্রকৃত অসহায় দুস্থ ও সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিনে গিয়ে কোনো কবরস্থানের সন্ধান মেলেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, জান্নাতুল বাকী নামে অত্র এলাকায় কোন কবরস্থানের অস্তিত্ব নেই। খোকন ভূঞাঁ ইসলামী ফাউন্ডেশনে চাকরি করেন এবং শাহজাহান ভূঞাঁ পুলিশে চাকুরি করেন। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয়ে সাহস পাচ্ছে না।
অপরদিকে ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অনুদান শাখার এক স্মারন থেকে জানা (স্মারক নং-১৬.০০.০০০০.০০২.২০.০২৯.২০১৪-১৫/৪২৬) তারিখ ০৭/০৬/২০১৫, মোতাবেক দুস্থ মুসলিম পূর্নবাসনের উদ্দেশ্যে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার ১২টি চেক কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করা হয়। ১২টি চেকের মধ্যে ক্রমিক নং ১ এ খোকন ভূঞাঁ, পিতা/স্বামী মো: মতি মিয়া, মাতা আনোয়ারা বেগম ৯৬৭৯৯৮৩ নং চেকের দশ হাজার টাকা উত্তোলন করেন এবং ক্রমিক নং ১১ এ আনোয়ারা বেগম, পিতা/স্বামী মতি ভূঞাঁ, মাতা হাজেরা আক্তার গ্রাম ও পোষ্ট মুমুরদিয়া, কটিয়াদী ৯৬৭৯৯৯৯ নং চেকে দশ হাজার টাকা গ্রহণ করে। বাস্তবে খোকন ভূঞাঁর মাতা আনোয়ারা বেগম। এতে দেখা যায় একই পরিবারে দুই জন দুস্থ ভাতা পেয়েছেন।
মুমুরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, মুমুরদিয়াতে জান্নাতুল বাকী নামে কোন কবরস্থান আছে বলে আমি জানি না। এ নামে কোন সরকারি বরাদ্দ সম্পর্কেও আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত খোকন ভূঞাঁর নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইন-আনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।