নজর২৪ ডেস্ক- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কোথায় আওয়ামী লীগ? আমি তো আওয়ামী লীগকে দেখি না। আজ আওয়ামী লীগ কি দেশ চালায়, নাকি দেশে আওয়ামী লীগ আছে? দেশ তো চালায় অন্যরা।’
সোমবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ এই মহামারির সময়ে কতগুলো খাতে ব্যয় করা হচ্ছে। এগুলো কিন্তু ব্যয় করার প্রয়োজন নেই। কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই। যা খুশি তা-ই করা হচ্ছে। এই কথাগুলো আমাদের না। এই কথাগুলো নিরপেক্ষ সংস্থার। টিআইবি বলেছে, এই মহামারিতে বাংলাদেশে যতটা দুর্নীতি হয়েছে, এমন দুর্নীতি মনে হয় পৃথিবীর কোথাও হয়নি। মিনিমাম যে বিবেক বা মানুষের জন্য যে মিনিমাম ভালোবাসা দরকার, সেটা পর্যন্ত তাদের নেই।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘এই কোভিডের মধ্যেও আমরা আমাদের কাজ করেছি। কাজ করার চেষ্টা করছি। একটা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে কিন্তু আমরা রয়ে যাচ্ছি। এই বিষয়টা আপনাদের সবারই বিবেচনার মধ্যে নিতে হবে। এই কারণে নিতে হবে যে, ইটস নট ওনলি আওয়ার প্রবলেম।’
সরকার কোভিড টেস্ট কমিয়ে দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার নির্দেশ দিয়ে কোভিড টেস্টিং কমিয়ে দিয়েছে। সরকার বলছে যে, আপাতত বন্ধ রাখো। দিস এমাজিন। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোন জায়গায় চলে গেছে। আজকে লক্ষ্য করে দেখেন প্রতিদিনের ব্রিফিং বাদ দিয়েছে। কারণ আর কত মিথ্যা কথা বলবে। এখন একটা প্রেস রিলিজ দিয়ে দেয় অনলাইনে। সংক্রমণ তথ্য লুকিয়ে লাভ কী? সরকারের ব্যর্থতার কারণে, তাদের উদাসীনতার কারণে কোভিড ছড়িয়ে গেছে। এই অবস্থা হলে সরকারের প্রয়োজনটা কী?’
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে উত্তরণে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় জনগনকে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’ উচিত। মানুষের এ্খন এই সরকারের কাছে জবাব চাওয়া উচিত। সরকারকে বলা উচিত-এনাফ ইজ এনাফ। দয়া করে বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষমা দাও, তোমরা চলে যাও এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবার ব্যবস্থা করা।’
নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা কি শুধুমাত্র বিদ্যুতের জন্যে, গ্যাসের জন্যে, এসির জন্যে— নাকি ইচ্ছাকৃত কোনো স্যাবটাজ এখানে করা হয়েছে?— এ ব্যাপারে জাতি জানতে পারছে না। আমরা মনে করি যে, এই ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি দিয়ে অবিলম্বে তদন্ত কমিটি করা দরকার। এটার সঠিকভাবে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা দরকার এবং তাদের শাস্তির বিধান করার দরকার।’
সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিষয়টা (ঘটনা) খুবই রহস্যজনক। গভমেন্টের যে ভার্সন, সেই ভার্সন বিভিন্ন রকম হচ্ছে। তাদের যে মূল সংস্থা ফায়ার বিগ্রেড প্রথমদিন একরকম কথা বলেছে, পরে বিদ্যুত বিভাগের লোকেরা গিয়েছে তারা একম রকম কথা বলেছে, গ্যাসের লোকেরা গিয়ে তারা আরেক রকম কথা বলেছে।’
‘এরইমধ্যে ২৬ জনের প্রাণ চলে গেছে। বাকিদের শ্বাসনালীসহ পুরো শরীর দগ্ধ হয়েছে। আরও যে কত জন মারা যাবে তা বলা মুশকিল। দুর্ভাগ্যজনক যে, এই ঘটনাকে সেই রকম গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়নি’— বলেন মির্জা ফখরুল।