শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকায় অনেক জায়গায় লাঞ্ছিত হয়েছি। মানুষ বলত আমায় দিয়ে কিছু হবে না। থেমে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ডিসি স্যার নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এ সম্বলটুকু নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারব।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসকের কক্ষে এভাবেই বলছিলেন অফিস সহায়ক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শারীরিক প্রতিবন্ধী আশরাফুল করীম।
তিনি বলেন, আমাদের সামর্থ্য নেই টাকা পয়সা দিয়ে চাকরি নেওয়ার। মাত্র ৩ দিন আগে পরীক্ষা নিয়ে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরি পাব তা স্বপ্নেও ভাবিনি। এজন্য জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
মাত্র ৫৬ টাকার ব্যাংক ড্রাফটে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনে চাকরি পেলেন ৩০ তরুণ-তরুণী। বিনা টাকায় চাকরি পেয়ে তারা আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন। ঘুষ ছাড়া চাকরি দিয়ে ধারণা পাল্টে দিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আওতায় ৩০টি ৪র্থ শ্রেণির শূন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৬৫০০ জন আবেদনকারী। এর মধ্যে অফিস সহায়ক ৫ জন, নিরাপত্তা প্রহরী ১০ জন, মালি ২ জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ৯ জন, বেয়ারা ৩ জন ও সহকারী বাবুর্চি পদে ১ জন রয়েছেন।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসকের কক্ষে ৩০ তরুণ-তরুণীর হাতে ফুল ও নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত সুমাইয়া আক্তার বলেন, সদর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়পুর গ্রামে আমার বাড়ি। মাত্র ৫৬ টাকা খরচে চাকরি পাব স্বপ্নেও ভাবিনি। যেহেতু ঘুষ ছাড়া চাকরি পেয়েছি তাই আজীবন ঘুষ ছাড়া মানুষকে সেবা দেব, ইনশাল্লাহ।
সহকারী বাবুর্চি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত আবদুর রহিম (২৬) সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নিজসেনবাগ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি বলেন, শুনেছি সরকারি চাকরি মানে ঘুষের ছড়াছড়ি। কিন্তু এ পদে চাকরির জন্য কাউকে এক টাকাও ঘুষ দেওয়া লাগেনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ৩০ পদের জন্য সাড়ে ছয় হাজার আবেদন জমা পড়েছে। আমরা ২৬ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষা, ২৭ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষা এবং ২৯ নভেম্বর নিয়োগপত্র তুলে দিলাম। যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তারা বিনা টাকায় নিয়োগ পেয়েছে তারা যেন বিনা টাকায় মানুষের সেবা করে।