নজর২৪, ঢাকা- রাজধানীর রামপুরা এলাকায় সোমবার রাতে বাসচাপায় নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী মাঈনুদ্দিন ইসলাম ২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ৩ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন।
সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার মা রাশেদা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলছিলেন, ‘ছেলেটা আমার জন্মদিনেই মারা গেল।’
রাত ১০টার দিকে রামপুরা বাজার এলাকায় অনাবিল বাসের চাপায় প্রাণ হারান মাইনুদ্দিন। তিনি এ বছর একরামুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
মাইনুদ্দিন বাবা আবদুর রহমান ভান্ডারী পূর্ব রামপুরার মোল্লা বাড়ি এলাকায় চায়ের দোকানদার। তিনি বলেন, ‘গতকাল দুপুরে খাওয়ার পর ছেলে জানালো যে তার পরীক্ষা ভালো হয়েছে। সে ভালো কলেজে পড়তে চেয়েছিল।’
‘আমি ছেলেকে বললাম যে আমি অবশ্যই তাকে একটি ভালো কলেজে ভর্তি করব,’ বলেন মাইনুদ্দিনের বাবা আবদুর রহমান।
মাইনুদ্দিনের বাড়িতে তার বড় ভাইয়ের শ্যালক বাদশা মিয়া বলেন, মাঈনুদ্দিনের বাবা চায়ের দোকান চালান বাড়ির পাশে তিতাস রোড়েই। রাত ৯টা পর্যন্ত বাবার চায়ের দোকানেই কাজে ব্যস্ত ছিল সে। এরপর দোকান থেকে বেরিয়ে বন্ধুর বাড়িতে রামপুরা বাজার এলাকায় যায়। ফেরার পথে রাস্তা নিহত হয়।
এরপর পথচারীরা মাঈনদ্দিনের ফোন থেকে পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে জানায়। প্রথমে মঈনুদ্দিনের দুলাভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে মঈনুদ্দিনের ছিন্নভিন্ন শরীর রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর পরিবারের অন্যান্য লোকজন সেখানে পৌঁছায়।
এদিকে মাঈনুদ্দিন নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে রামপুরা বাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। মধ্যরাত পর্যন্ত এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় ঘাতক বাসের চালককে আটক করা হয়েছে বলে তাৎক্ষণিক জানায় পুলিশ।
বাসে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুরের বিষয়ে মাঈনুদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা জানান, সহিংস কোনো ঘটনার জন্য পরিবারের কেউ দায়ী নয়। খবর পেয়ে যখন পরিবারের লোকজন মরদেহের কাছে পৌঁছায়, তার আগেই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনগণ।