‘আমি ব্যর্থ হয়েছি’ বলে চোখের জলে ক্ষমা চাইলেন কিম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- এক সামরিক মহড়ায় সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আর নাগরিকদের জীবনের মান উন্নয়নে ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার সময় উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনকে আবেগাপ্লুত হতে দেখা গেছে। গত শনিবার দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে এক পর্যায়ে কিম জং উনকে কেঁদে ফেলতে দেখা যায়।

 

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। যদিও নিষ্ঠুর শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন দেশটির ওপর নিজের শাসন সুসংহত করে যাচ্ছেন এ তরুণ নেতা। উত্তর কোরীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তার পাগলাটে বাবা কিম জং ইলের চেয়ে নিজেকে আরও বেশি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চাচ্ছেন কিম জং উন।

 

উত্তর কোরীয়বিষয়ক গবেষক রাচেল মিন ইয়ং লি বলেন, উনের বিনয়, সারল্য, চোখের পানি ও কণ্ঠরোধ একেবারেই অস্বাভাবিক। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনা তার প্রশাসনের ওপর তীব্র চাপের বহিঃপ্রকাশ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় ব্যর্থতার কারণে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা-হইহুল্লোড় তৈরি হওয়াতেই ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তিনি।

 

কিম বলেন, আমাদের জনগণ আমার ওপর আকাশের মতো বিশাল ও সাগরের মতো গভীর আস্থা রেখেছেন। কিন্তু এই আস্থা সন্তোষজনকভাবে ধরে রাখতে আমি ব্যর্থ হয়েছি।

 

কোরিয়া টাইমস তার মন্তব্যকে ‘আমি তার জন্য সত্যিকার অর্থে দুঃখিত’ বলে ব্যাখ্যা করেছে। উত্তর কোরিয়ার সাবেক দুই নেতা- নিজের দাদা ও বাবাকে উদ্ধৃত করে কিম বলেন, ‘এই দেশকে মহান দুই কমরেড কিম ইল সাং ও কিম জং ইলের নীতি-আদর্শ ধরে রেখে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য মহান দায়িত্ব আস্থার সঙ্গে আমাকে দিয়েছে জনগণ। কিন্তু আমাদের জনগণের জীবনের বিভিন্ন সমস্যা থেকে তাদের বের করে আনার জন্য পর্যাপ্ত ও যথেষ্ট প্রচেষ্টা আমি নিতে পারিনি।’

 

করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক চাপে পড়েছে উত্তর কোরিয়া। স্বৈরশাসনের দেশটির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। অবশ্য উত্তর কোরিয়া নিজেদের দেশে একজনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি বলে দাবি করে আসছে। সেনা উপস্থিতি, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও ট্যাংকসহ সামরিক শক্তিতে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিলেও করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে সহায়তা চান কিম জং উন। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথাও জোর দিয়ে বলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *