পশু পাখিদের জন্য ফলের বাগান দিয়েছেন ঘাটাইলের আব্দুল আজিজ

খাদেমুল ইসলাম মামুন, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: ”পশু-পাখি পাবে খাদ্য ও আশ্রয়স্থল আর মানুষ পাবে হিমশীতল পরিবেশ” এই আশা নিয়ে আমি যুবক বয়স থেকেই গাছ লাগানো শুরু করি। আজ ৫৫ বছর বয়সে এসেও গাছ লাগিয়ে যাচ্ছি এবং যতদিন বাঁচব গাছ লাগিয়েই যাব।

 

এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক গাছ লাগানো হয়েছে এবং আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মও যেন গাছ লাগিয়ে যেতে পারে এ জন্য গড়ে তুলেছি নিজস্ব নার্সারি। যারা গাছ লাগাতে চায় সেখান থেকে বিনামূল্যে দিয়ে থাকি গাছের চারা। এটাই আমার শান্তি যে এখন সবুজ পরিবেশ গড়ে উঠছে। তালগাছ থেকে শুরু করে বট-পাকুড়, আম, জাম, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, হরীতকী-বহেড়া গাছ লাগাতে লাগাতে কখন যে বৃক্ষপ্রেমিক হয়ে গেছি তা বলতে পারবো না।

 

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের শালিয়াবহ গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ। নিজের ৮ একর জায়গায় লাগিয়েছেন শুধু গাছ আর গাছ। তাছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তার দুপাশে লাগিয়েছেন লক্ষ লক্ষ তালগাছ।

 

সরজমিনে চাষা আব্দুল আজিজের বসত বাড়ি এবং বাগান বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শুধু গাছ আর গাছ। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। এমন কোন গাছ নেই যা চাষা আজিজের বাগানে নেই। ফল গাছ থেকে শুরু করে ঔষধি গাছ। তালগাছ থেকে শুরু করে বট-পাকুড়, আম, জাম, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, হরীতকী-বহেড়াসহ না জাতের গাছ রয়েছে তাঁর বাগানে। বিভিন্ন জাতের মাল্টা গাছে গাছে দোল খাচ্ছে। এক অন্য রকম সবুজ শীতল পরিবেশ।

 

বাগান ঘুরে বিভিন্ন গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ফাঁকে বলেন, “প্রথম প্রথম অনেকেই আমাকে পাগল বলেছে, আবার অনেকেই বলেছে গরিবের ঘোড়া রোগ ধরেছে। আবার অনেকেই আমার লাগানো ছোট গাছগুলো কেটে ফেলেছে। কিন্তু আমি দমে যায়নি। সেই কেটে ফেলা গাছের স্থলে আবারও লাগিয়েছি নতুন গাছ। করেছি পরিচর্যা। মানুষের সব তাচ্ছিল্য তুচ্ছ মনে করে আমি আমার লক্ষ্যে অবিচল থেকে গাছ লাগিয়েই চলেছি।

 

এলাকার ১০ কিলোমিটার জায়গা আজ গাছে গাছে ছেয়ে গেছে। বেড়েছে পাখ-পাখালির আনাগোনা। পশুপাখি পেয়েছে নিরাপদ আবাসস্থল এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য। এলাকার হিমশীতল পরিবেশ এখন সবাই ভোগ করছে, এটা ভেবেও আমি শান্তি পাচ্ছি।

 

চাষা আজিজের গাছ লাগানোর স্বীকৃতি হিসাবে ২০১০ সালে চ্যানেল আই বর্ষ সেরা পুরস্কার পান। ২০০৮ সালে সাদা মনের মানুষ হিসাবেও স্বিকৃত লাভ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *