নোয়াখালীর সেই নারীকে আগেও ২ বার ধ.র্ষ.ণ করে দেলোয়ার

নজর২৪ ডেস্ক- নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা ওই নারীকে এক বছর আগে দুইবার ধর্ষণ করেছিলেন দেলোয়ার বাহিনীর দেলোয়ার। আজ মঙ্গলবার মানবাধিকার কমিশন তদন্ত দলের কাছে এক জবানবন্দিতে এই কথা জানান ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। ওই গৃহবধূ তদন্ত দলকে আরও জানান, দেলোয়ারের ভয়ে তিনি একথা এর আগে এতদিন কাউকে বলেননি।

 

পরে তদন্ত দলের প্রধান মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মিলনায়তনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

 

আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর বলেন, নারীর অভিযোগ অনুযায়ী দেলোয়ার প্রায় সময় তাঁকে অশোভন প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাবে সাড়া দিতে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হতো। প্রায় বছর খানেক আগে দেলোয়ার তাঁর ঘরে ঢুকে তাঁকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। এরপর গেল রমজানের কিছুদিন আগে দেলোয়ার তাঁর সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে পাঠান। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম দুজনই তাঁকে ধর্ষণ করতে চায়। এ সময় তিনি দেলোয়ারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলে কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন দেলোয়ার। এরপর নৌকায় দ্বিতীয়বার তাঁকে ধর্ষণ করেন।

 

আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর বলেন, নারীর এই অভিযোগ শোনার পর তিনি বিষয়টি নিয়ে কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন। চেয়ারম্যানের পরামর্শ মতে তাঁরা ওই নারীকে দিয়ে দেলোয়ার ও কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক একটি মামলা করাবেন। এ ক্ষেত্রে কমিশনের প্যানেল আইনজীবীরা আদালতে মামলাটি পরিচালনা করবেন।

 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বিকেল সাড়ে চারটায় গণমাধ্যমকে বলেন, আগের অভিযোগের পাশাপাশি ওই নারী এখন যেসব নতুন অভিযোগ করেছেন সেগুলোও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

এর আগে গত রোববার ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। গৃহবধূর স্বজনরা জানায়, স্বামী অন্যত্র বিয়ে করায় বেগমগঞ্জে বাবার বাড়িতেই থাকতেন নির্যাতনের শিকার নারী। দীর্ঘদিন পর গত ২ সেপ্টেম্বর স্ত্রী’র সাথে দেখা করতে আসেন স্বামী। এসময় অনৈতিক কাজের অভিযোগ এনে গৃহবধূকে মারধর করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। বিবস্ত্র করে ধারণ করে ভিডিও। এমনকি এসময় ওই গৃহবধূর স্বামীকে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় প্রধান আসামি বাদল ও দেলোয়ারসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে রাতে দেলোয়ারের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে তার মাছের খামারে অভিযান চালিয়ে ৭টি তাজা ককটেল ও দুটি গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব।

 

জানা গেছে, হত্যাসহ চারটি মামলা থাকারও পরও এতদিন ধরাছোয়ার বাইরে ছিলেন দেলোয়ার। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে দাপটের সাথে চলাফেরা ছিলো তাদের। তবে ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পেত না স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *