নজর২৪ ডেস্ক- গত জুলাই পর্যন্ত এক বছরে ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় ফ্ল্যাট, বাড়ি কেনার জন্য দেশটির সেকেন্ড হোম প্রকল্পভুক্ত হয়েছেন। এর আগে সাত হাজার বাংলাদেশি এই প্রকল্পভুক্ত হয়ে মালয়েশিয়ায় বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। তারা বৈধভাবেই মালয়েশিয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছেন।
জানা গেছে, সেকেন্ড হোম হিসেবে যেসব বিদেশি নাগরিক মালয়েশিয়াকে বেছে নিচ্ছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান তৃতীয়। এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিদেশিরা স্থাবর সুবিধা ও রাজস্ব হিসেবে দেশটির জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মালয়েশিয়ায় টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন না করায় অনেক বাংলাদেশি এই সুযোগ নিচ্ছেন। সম্প্রতি দেশটির সারওয়াকে সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে নতুন সংশোধিত প্রয়োজনীয়তা এবং বিধিমালা রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। এতে নতুন নীতিমালায় রাজ্যে বাড়ি নির্মাণে বা সেকেন্ড হোম করতে বিদেশিরা আকৃষ্ট হবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
নতুন আবেদনকারীদের নিজ দেশে প্রাসঙ্গিক সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভালো আচরণের একটি চিঠি জমা দিতে হবে আবেদনের সঙ্গে এবং অংশগ্রহণকারীদের কোনও অপরাধমূলক অপরাধ থাকলে এসএমএম ২ এইচ পাসটি বাতিল করা হবে।
চলমান, মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার এবং সীমান্ত বিধি-নিষেধের কারণে বিদেশিরা এই মুহূর্তে সরওয়াকে আসতে পারছেন না। সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে আবেদনকারীর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে রাজ্য অনড়। এক্ষেত্রে অপরাধী বা অর্থপাচারের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িতদের রাজ্যে স্বাগত জানায় না বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট নতুন করে ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধ অধিকার পাওয়ার তথ্য জানায়। মালয়েশিয়া সরকার বিদেশিদের সে দেশে জমি, ঘর-বাড়ি কিনে বাস করার আইনসম্মত অধিকার দিয়েছে। বিদেশি অর্থ, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে তাদের এ নীতি ব্যাপক সাফল্য এনেছে।
৫০ বা তার বেশি বয়সী বিদেশিকে মালয়েশিয়ায় স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য দেশটির ব্যাংকে দেড় কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট আকারে জমা রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আবেদনকারীর মাসিক আয় হতে হবে ১০ হাজার রিঙ্গিত। যাদের বয়স পঞ্চাশের নিচে, তাদের ফিক্সড ডিপোজিট তিন কোটি টাকা ও মাসিক আয় দেখাতে হয় ২০ হাজার রিঙ্গিত।
মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের হোম প্রকল্পভুক্ত থেকে আগ্রহী বিদেশিদের ফিক্সড ডিপোজিট ও মাসিক আয় প্রদর্শনের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে। তার পরও বিদেশিদের আগ্রহ কমেনি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, আমিরাত, কুয়েত, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ মালয়েশিয়াকে তাদের সেকেন্ড হোম হিসেবে বেছে নিয়েছে। আরও ৫০ হাজারের বেশি আবেদন প্রক্রিয়াধীন। বাংলাদেশ থেকে আরও ৪ হাজার আবেদনকারী রয়েছেন, যারা নির্ধারিত পরিমাণ ফিক্সড ডিপোজিট জমা রেখেছেন। মাসিক আয়ও দেখিয়েছেন।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তারা সেকেন্ড হোম প্রকল্পভুক্ত হবেন। বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে মালয়েশিয়া আট বছর আগে এ প্রকল্প চালু করে। এতে তারা বিপুল সাড়া পাওয়ার পর বিদেশিদের প্রকল্পভুক্ত করার হার কিছুটা কমিয়ে এনেছে। বাংলাদেশিদের মধ্যে বিপুল সাড়া পড়ার ঘটনা মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকেও বিস্মিত করেছে।