কেবিনে নারীর সন্তান প্রসব, আজীবনের জন্য যাতায়াত ফ্রি করলেন লঞ্চ মালিক

বরিশাল প্রতিনিধি- ঢাকা থেকে বরিশালগামী বিলাসবহুল এমভি এ্যাডভেঞ্জার-৯ লঞ্চের কেবিনে সন্তান প্রসব করেছেন এক মা। শনিবার (০৩ অক্টোবর) রাত পৌনে ১২টার দিকে ২১০ নং কেবিনে সন্তান প্রসব করেন তিনি। বর্তমানে নবজাতক এবং তার মা শারীরীক দিক থেকে পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন লঞ্চটির সুপারভাইজার মোঃ সাইফুল ইসলাম।

 

তিনি জানান, এটি অত্যান্ত আনন্দের সংবাদ।এ্যাডভেঞ্জার লঞ্চ ইন্ডাস্ট্রিজের সবাই খুশি হয়েছেন। এমনকি নিজাম শিপিং লাইন্সের স্বত্ত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন (সিআইপি) সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক, তার মা এবং বাবার লঞ্চে যাতায়াতের ভাড়া আজীবনের জন্য মওকুফ করে দিয়েছেন। তারা এ্যাডভেঞ্জার লঞ্চে সবসময় বিনামূল্যে যাতায়াত করতে পারবেন।

 

সাইফুল ইসলাম আরও জানান, লঞ্চ মালিকের স্ত্রী খুশি হয়ে পুরো পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে চিকিৎসা খরচ নিয়েছেন। তাছাড়া নবজাতকের নাম নিজাম শিপিং লাইন্সের স্বত্ত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন সিআইপির নামের সাথে মিলিয়ে নুসাইবা রাখা হয়েছে।

 

জানা গেছে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল গ্রামের বাসিন্দা ফোরকান হাওলাদার ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সেখানে তার স্ত্রী ফাহিমা বেগমকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন চলতি মাসের ২২ তারিখ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাব্য সময়। সে কারনে আগেই গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য শনিবার ঢাকা থেকে এ্যাডভেঞ্জার লঞ্চে ওঠেন।

 

তারা ডেকে অবস্থান করছিলেন। রাত ১১টার দিকে ফাহিমা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে লঞ্চ স্টাফরা লঞ্চে প্রসূতি অভিজ্ঞ কারও সন্ধানে মাইকিং করেন। এতে সারা দিয়ে দুইজন নারী এগিয়ে আসেন। সংবাদ পেয়ে ছুটে আসেন লঞ্চে অবস্থানকারী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাহনাজ শারমীন।

 

অসুস্থ্য ফাহিমাকে দ্রুত ২১০ নং কেবিনে নেওয়া হয়। সেখানে লঞ্চ স্টাফ, সাহায্যকারী ধাত্রী এবং শিশু বিশেষজ্ঞ শাহনাজ শারমীনের সহায়তায় সুস্থ এক কন্যা শিশুর জন্ম দেন ফাহিমা।

 

ফোরকান হাওলাদার বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তান সুস্থ আছেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আমাকে নদীর মধ্যে বসেও সহায্যের জন্য এত মানুষ পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতক ও তার মায়ের শারীরীক অবস্থা পরীক্ষা করে তারপর আমরা গ্রামের বাড়িতে ফিরবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *