নজর২৪, ঢাকা- বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে।
রবিবার (৪ অক্টোবর) সকালে বরগুনা কোর্টের জারিকারক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম পিকু এবং সুপ্রিম কোর্টের আদান-প্রদান শাখার কর্মকর্তা ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পূর্বে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এটাই ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল দায়ের করে থাকেন। এখন সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করতে চান তাহলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে থাকে। যেমনটি নেয়া হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলা, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ এস আলী হত্যা মামলা ও ব্লগার রাজিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের ক্ষেত্রে।
এদিকে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি নিয়ে হাইকোর্টে এসেছেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। রোববার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাইকোর্টে আসেন তিনি।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর জানান, এখন তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার চেম্বারে আছেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৪২৯ পৃষ্ঠার রায়ের কপি হাতে পান তিনি। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পরই উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
উল্লেখ্য, রিফাত হত্যা মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। প্রাপ্তবয়স্ক বাকি চার আসামি পেয়েছে বেকসুর খালাস।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া বাকি পাঁচ আসামি হলো রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় (২২) ও মো. হাসান (১৯)।
গত ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে কিশোর গ্যাং ‘বন্ড বাহিনী’র সদস্যরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। ওই হত্যাকাণ্ড সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পরদিন রিফাতের বাবা মো. আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিল, তাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের বিচার চলে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। অপ্রাপ্তবয়স্ক বাকি ১৪ আসামির বিচার চলছে শিশু আদালতে।