‘হামরা কী দেশের কিছু না, সরকার হ্যামাক দেখে না ক্যানে?

সাইফুল ইসলাম মুকুল, রংপুর ব্যুরো- হামরা এটে পরি আছি ক্যায় নেয় হ্যামার খবর। সংবাদকর্মীদের দেখে এবাবে দুঃখ প্রকাশ করছিলেন রংপুরের গংগাচড়া আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান পাড়ার তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধে আশ্রিত ২৫ জেলে পরিবার।

 

প্রায় দেড় মাস থেকে তিস্তার ডান তীর বাঁধে খোলা আকাশের নীচে পলিথিনের চাউনিতে পরিবার পরিজন ও গবাদিপশুসহ মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। চরম দূর্দশায়ও এখন পর্যন্ত কেউ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেননি বলে সাংবাদিকদের জানান ভূক্তভোগীরা।

 

সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতায় প্রতিটি বাড়ির উঠোনে কিংবা মেঝেতে কোথাও হাটু কিংবা হাটুর নীচে পানি। লোকজন পলিথিনের ভিতরে চুলা বসিয়ে গত ৩৫ দিন ধরে রান্না করছে।

 

জানা যায়, নদী ভাঙ্গা লোকজন ভিটেমাটি হারিয়ে কয়েক বছর থেকে তিস্তার বাঁধের ধারে বাড়ি করে বসবাস করে। চলতি বছর বাঁধের সংষ্কার কাজ করার কারণে ওই পরিবার গুলো তাদের বাড়ি বাঁধের ধার হতে সড়িয়ে বাঁধের নীচে আবারও স্থাপন করে। তারা পেশায় সবাই জেলে। অব্যাহত প্রবল বর্ষণের কারণে নিচু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় গত ৩৫ দিন ধরে ওই ২৫ পরিবার পানি বন্দি হয়ে রয়েছে। ঘর ও বাড়িতে এখনও পানি থাকায় ওই পরিবার গুলো তিস্তা ডান তীর বাঁধের উপরে খোলা আকাশের নীচে পলিথিনের চাউনিতে পরিবার পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাঁধেই রান্নার কাজ সারছেন অনেকে। পানিবন্দি লোকজনের অভিযোগ ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যান কেউ তাদের দেখতে যায়নি।

 

লালচাদ, শরোনজা, বিমল, করুন, ঝালু, অতন ক্ষোপ ঝেড়ে জানালেন, বড় বড় গল্প করার সময় আছে, হামরা যে কী অবস্থায় আছি ক্যায়ো আইসে নাই হামার খবর নিবার। হামরা কী দেশের কিছু নোয়ায়। সরকার হ্যামাক দেখে না ক্যানে?

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য লাল মিয়া তার ওয়ার্ডের ২৫ পরিবার পানিবন্দি থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, কেমন করি যাই। আমার কাছেতো কোন বরাদ্দ নাই। করার কিছু নেই আমার। পানিতো বের করে দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যানতো এদিকে দেখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *