রংপুরের ৫ জেলায় সরকারি সার-বীজের সংকট উৎপাদন ব্যাহতের শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের

সাইফুল ইসলাম মুকুল, রংপুর ব্যুরো- রংপুর অঞ্চলে সরকারি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সার ও বীজের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। রংপুরের পাঁচ জেলার ৮০০ ডিলার চাহিদামতো সার ও বীজ পাচ্ছে না। এর মধ্যে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা এখন পর্যন্ত ডিপিএ সারের বরাদ্দ পায়নি। ফলে বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠে কৃষকরা সঠিক সময়ে সার ও বীজ পাবে কিনা এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

 

রংপুর অঞ্চল বিএডিসির বীজ ও সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ অঞ্চলের ৫ জেলার ডিলাররা ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন আলুবীজ, ২ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ধানবীজ, ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গমবীজ ও ৬২ মেট্রিকটন হাইব্রিড ধান বীজ বরাদ্দ পেয়েছিল। এবার এসব বীজের বরাদ্দ অর্ধেকও পায়নি তারা। ফলে ডিলাররা কৃষকদের মাঝে সময় মতো বীজ সরবরাহ করতে পারেনি।

 

অপরদিকে জনপ্রতি ডিলারের প্রতিমাসে ৩০০ বস্তা করে ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। অথচ তিন মাসে ডিলাররা পেয়েছেন গড়ে ১৫ থেকে ১৮ বস্তা। ফলে ৪ দফা বন্যা ও এক দফার প্রবল বর্ষণের পর সময় মতো ফসল বপন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনেক কৃষকের মাঝে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

 

কাউনিয়ার আলু চাষি আকমল মিয়া বলেন, প্রতি বছর বিএডিসির আলু ও সবজি বীজ সংগ্রহ করে বপন করি। এবার বিএডিসির কোনো সার ও বীজ পাইনি। বাজার থেকে বেশি দামে সার বীজ সংগ্রহ করে চাষ করতে হবে।

 

রংপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান খান আলুবীজ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। বন্যার কারণে সারা দেশেই আলু বীজ সংকট রয়েছে। অন্যান্য বীজ সংকট না থাকলেও বরাদ্দ কিছু কম রয়েছে। তিনি বলেন, সারের বিষয়টি আমি দেখি না। তবে শুনেছি সারেও কিছু সংকট রয়েছে।

 

রংপুর অঞ্চলের বিএডিসি বীজ ও সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. বাবুল মিয়া বলেন, উ™ভূত পরিস্থিতিতে সংকট নিরসনে আমরা পাঁচ জেলার ডিলাররা শনিবার মতবিনিময় করেছি। সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

 

অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলী হাকিম বলেন, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় শষ্যভান্ডার বলে খ্যাত রংপুর অঞ্চল কৃষিখাত বিপর্যয়ের সম্মুখীন। এ অঞ্চলের কৃষকরা আলু, গম, ভুট্টা, ধান, বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করে স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠাতে পারে। কিন্তু বিএডিসির ডিলাররা চাহিদামাফিক বীজ ও সার সময় মতো কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *