নজর২৪, সিলেট- সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যে এবার নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকায় এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত কিশোর নিজু আহমদ (২০) ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলেও জানা গেছে।
ওই কিশোরী এখন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি আছে। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কিশোরীকে ধর্ষণ করে ওই কিশোর।
জানা যায়, অভিযুক্ত নিজু আহমদ দাঁড়িয়াপাড়া ১৪/বি বাসার বাসিন্দা এবং মদন মোহন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিজু আহমদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে বাসায় এনে ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরের দিন তাড়িয়ে দেয়। পরে ওই কিশোরী ধর্ষণের বিষয়টি তার বাসায় জানায়।
ঘটনা জানার পর পরিবারের সদস্যরা তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন। এরপর রাতে ওই কিশোরীর মা নিজু আহমদকে আসামী করে সিলেট কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩ (০৩.১০.২০)।
এ ব্যাপারে সিলেট নগরের ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট বলেন, আমিও এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি সম্ভবত ২/৩ দিন আগে ঘটেছে। অভিযুক্ত কিশোর দাড়িয়াপাড়া এলকায় ভাড়া থাকে। আর কিশোরী নগরের আরেকটি এলাকায় থাকে।
তিনি বলেন, অভিযোগকারী কিশোরীর পরিবার আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নয়, তাই দুদিন আগে ঘটনা ঘটলেও সম্ভবত সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছিলো। আবার তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো বলেও একটি পক্ষ দাবি করেছে। যদিও কোনো কিছুই এখন পর্যন্ত আমি নিশ্চিত নই।
সম্রাট বলেন, অভিযুক্ত কিশোর ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে যায় বলে শুনেছি। এখন তো সবাই-ই ছাত্রলীগ।
এ ব্যাপারে কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিঞা শুক্রবার মধ্যরাতে বলেন, এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত কিছু এখনও জানি না। এ ব্যাপারে ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই তরুণীকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে বেঁধে রাখা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
এঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম নামে তিন ছাত্রলীগ নেতা শুক্রবার (২ অক্টোবর) দায় স্বীকার করে আদলতে জবানবন্দি দিয়েছেন।