নজর২৪, সিলেট- সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন ও রবিউল।
পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে কড়া পুলিশ পাহারায় আসামিদের আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অর্জুন ও সাইফুর রহমানের জবানবন্দি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ জিয়াদুর রহমান। এছাড়া মামলার পাঁচ নম্বর আসামি রবিউলের জবানবন্দি গ্রহণ করেন মহানগর হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. সাইফুর রহমান।
প্রথমে গণধর্ষণের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর। তিনি একবার ওই নারীকে ধর্ষণ করেন বলে জানান।
এরপর ঘটনার সঙ্গে নিজে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাইফুরের জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক জিয়াদুর রহমান।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর গৃহবধূকে একবার করে ধর্ষণ করেন বলে আদালতে স্বীকার করেন। এছাড়া রবিউল ইসলাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, তিনি সরাসরি ধর্ষণে অংশ নেননি। তবে তিনি দুজনকে মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় বলে স্বীকার করেন।
সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত পৌনে ১১টা) মহানগর হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারকের এজলাসে আলোচিত এ মামলার পাঁচ নম্বর আসামি ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি তদন্ত ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, রিমান্ড শেষে শুক্রবার বিকেলে সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে আদালতে হাজির করানো হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে আদালতের বিচারক তাদের জবানবন্দি রেকর্ড (নথিভুক্ত) করার পর তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওসি বলেন, আগামীকাল শনিবার রিমান্ড শেষে আরও তিনজনকে আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে গত সোমবার সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান। এছাড়া মামলায় গ্রেফতারকৃত আরো ৫ আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যারাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদি হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় এজাহারনামীয় সব আসামিসহ সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯ এর হাতে গ্রেফতার আটজনের প্রত্যেককেই ৫ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ও রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হচ্ছে- সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান রনি, রাজন, তারেক আহমদ, আইনুল ও মাহফুজুর রহমান মাছুম।