‘এখন কেমনে খামু শোল মাছ, আল্লাহ গো আমারেও লইয়া যাও’

নজর টুয়েন্টিফোর ডেস্ক- ‘আমারে কইলো মা নামাজ পইড়া বাসায় আইতাছি। বাসায় যাইয়া ভাত খামু। কি রানসো ( রান্না করছো) তুমি। কইলাম শোল মাছ রানছি (রান্না করছি) বাবা। দুপুরেও তো খাও নাই তাড়াতাড়ি আইসো।’

 

‘এখন কেমনে খামু শোল, আল্লাহ গো আমারেও লউয়া যাও।’ এভাবেই ছেলেহারা এক মা প্রলাপ করে কান্নাকাটি করছিল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

 

গতকাল শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তার ছেলে রিফাত (১৮)।

 

ছেলে হারানো এই মা কাঁদতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাকে পানি খাওয়ানোর চেস্টা করে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন স্বজনরা।

 

নিহতের এক স্বজন হাসেম আলী জানায়, স্কুলে পড়ুয়া রিফাত অন্য উঠতি বসয়ী ছেলেদের মতো ছিল না। খুবই শান্ত স্বভাবের এই ছেলেটি ছিল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি। গতকাল রাতে এশার নামাজের জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে মসজিদে এসেছিল সে। এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে মারা যায় রিফাত।

 

শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ৩৭ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। দগ্ধ স্বজনকে দেখতে রাতেই হাসপাতালে এসেছেন অনেকে। সারারাত সেখানে অবস্থানও করেছেন। রাত থেকেই স্বজনরা হাসপাতালের সামনে আহাজারি করছেন। এক পলক দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন হাসপাতাল গেটে।

 

এর আগে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত মোট ১৬ জনের প্রাণ গেছে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *