নজর২৪, বরগুনা- বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় ৪ জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।
এর আগে বেলা সোয়া একটায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান আদালতে রায় পড়া শুরু করেন। এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক আট আসামিকে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে আদালতের এজলাসে উঠানো হয়।
এর আগে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে র্যাব ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে আসামিদের আদালতে নিয়ে আসা হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৪), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২২), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (২০), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৩), মো. হাসান (২০) ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (২০)। আসামিদের মধ্যে মো. মুসা পলাতক আছেন। মুসা ছাড়া অন্য আসামিদের উপস্থিতিতেই এ রায় ঘোষণা করা হয়।
এছাড়াও মামলার অপর চার আসামি রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২১), মো. সাগর (২০), মো. মুসা (২৩) ও কামরুল ইসলাম সাইমুনকে (২২) খালাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছে। এছাড়া মিন্নি উচ্চ আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন। আর বাকি আসামিরা কারাগারে ছিলেন।
এর আগে এ বছরের ১ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। আর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৮ জানুয়ারি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ ফাঁস হলে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলে।
ওই মামলায় প্রথমে মিন্নিকে সাক্ষী হিসেবে দেখানো হলেও, পরে এক আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। মামলার চার্জশিটে পুলিশ আরও ১৪ জনকে অভিযুক্ত করেছিল। তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে চলছে।