নজর টুয়েন্টিফোর, ঢাকা- সবজি নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তির মধ্যেই এবার যোগ হলো পেঁয়াজ। গতকাল শুক্রবার এক দিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) গতকাল তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।
এদিকে সবজির পাশাপাশি হঠাত্ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। গতকাল বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি ছিল ক্রেতাদের মুখেমুখে। কারণ, পেঁয়াজের দাম নিয়ে গত বছরের অস্বস্তি এখনো ক্রেতাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে। সে সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যায়। ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকায় উঠে যায়। যা নিয়ে সারাদেশে রীতিমতো তোলপাড় হয়ে যায়।
এখন আবার নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আগের সেই আতঙ্ক কাজ করছে ক্রেতাদের। গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এক দিন আগে যা যথাক্রমে ৪০ থেকে ৪৫ ও ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
নয়াবাজারের খুচরা বিক্রেতা আলাউদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বেশি দামে এনে বেশি দরেই বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে পাইকাররা বলছেন, ‘সরবরাহ কম, তাই দাম বাড়তি। যা নেয়ার নিয়ে নেন, পরে দাম আরও বাড়বে।’ তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আছে।
পণ্যটির দাম বাড়ার চিত্র বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকায় দেখা গেছে। টিসিবি বলছে, মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর কেজিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে ৫৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
জানতে চাইলে ভোক্তার স্বার্থ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি। এর মধ্যে পেঁয়াজ নিয়ে পুরনো সিন্ডিকেট আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত বছর পেঁয়াজ নিয়ে যারা সিন্ডিকেট করে ভোক্তাকে চাপে ফেলেছিল তাদের তালিকা সরকারের কাছে থাকার পরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। যে কারণে সেই একই অজুহাতে অসাধুরা পণ্যটির দাম বাড়াতে শুরু করেছে। অবিলম্বে মুনাফাখোরদের এই তৎপরতা বন্ধে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অধিদফতরের তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশে চাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ রয়েছে। তাই নিত্যপণ্য নিয়ে কারসাজি করলে অধিদফতর জিরো টলারেন্স দেখাবে।