আলোচিত সেই মামলার রায় আগামীকাল, মিন্নির সর্বোচ্চ শাস্তি চান রিফাতের বাবা

নজর২৪, বরগুনা- বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার ঘটনায় স্ত্রী মিন্নির ভূমিকা কী? উত্তর মিলবে আগামীকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আদালতের রায়ে। মাত্র এক বছর তিন মাসে শেষ হচ্ছে আলোচিত এই মামলার বিচার কাজ।

 

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির রায় কাল। এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ২৪। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ১৪ আসামির বিচার শিশু আদালতে চলছে। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। মামলার ১০ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মনে করেন, সব আসামি বেকসুর খালাস পাবেন।

 

এদিকে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ন্যায় বিবেচনায় আদালত যা রায় দিবেন তা-ই চুড়ান্ত। আদালতের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তবে মিন্নির আইনজীবী হিসাবে আমি মনে করি, প্রসিকিউশন মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। বরং আমরা আদালতকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছি মিন্নি কিভাবে তার স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছেন। সে কোনভাবেই খুনের সাথে জড়িত নয়। রায়ে মিন্নি খালাস পাবে মর্মে আমরা আশাবাদী।

 

তবে যুক্তিতর্ক শেষের দিন নিহত রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের ওপর আমার আস্থা আছে। আশাকরি আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাবো।

 

তিনি বলেন, এ ঘটনার মাস্টার মাইন্ড আমার ছেলের সাবেক স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আমি আশা করি।

 

নিহত রিফাতের মা ডেইজি আক্তার বলেন, রিফাতকে আর ফিরে পাব না। এতদিন ধরে হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক রায়ের অপেক্ষায় আছি। আমাদের প্রত্যাশা আদালত সব আসামিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন।

 

আদালত সূত্র জানায়, ১ জানুয়ারি বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং আসামিদের পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে অভিযোগ গঠন করেন। ৮ জানুয়ারি থেকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ৭৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি একজন সাক্ষী বিদেশে থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

 

মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে শুধু জামিনে আছেন নিহত রিফাতের স্ত্রী ও মামলার সাত নম্বর আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। পলাতক রয়েছেন মামলার ৬ নম্বর আসামি মো. মুসা। বাকি আট আসামি রয়েছেন বরগুনার জেলা কারাগারে।

 

কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। আসামিদের মধ্যে পলাতক মুসা ব্যতীত বাকিরা রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *