হঠাৎ যমুনায় তীব্র ভাঙন, নদীগর্ভে বিলীন মসজিদ-মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি

মোল্লা তোফাজ্জল, টাঙ্গাইল থেকে- টাঙ্গাইলের যমুনা নদীতে পানি কমার শুরুতেই তীব্র ভাঙন কবলে পড়েছে টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার চর পৌলী, কাকুয়া, হগড়া গয়রাগাছা, চকগোপাল, কাতুলি ও মাহমুদনগর ইউনিয়নের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

 

গত এক সপ্তাহে মসজিদ মাদ্রাসাসহ প্রায় শতাধিক ঘর বাড়ি বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়েছে ভাঙ্গন কবলিতরা। স্থায়ী বাঁধ নির্মানের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে দাবী করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

 

মাহমুদনগর ইউনিয়নের স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের চাপে বর্ষার ভাঙনে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হলেও যুগের পর যুগ ধরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হলো তা বাস্তবায়ন হয়নি। যার ফলে প্রতিবছর তাদের এই ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে। ভাঙনের এ রূপ অব্যাহত থাকলে একদিন টাঙ্গাইল জেলা মানচিত্র থেকে এ ইউনিয়নটি বিলীন হয়ে যাবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন তারা।

কাকুয়া ইউনিয়নের নুরু ডা. বলেন, আমার বাবার প্রায় ৮০ বিঘা জমি ছিল। যমুনা নদীর ভাঙ্গনে আমাদের কিছুই রইল না। ছোট সময় থেকে শুনে আসতেছি এই নদীতে বাঁধ হবে,এখন তো আমাদের সব শেষ আর বাঁধ দিয়ে কি হবে।

 

বাড়ী ভাঙ্গা আবু তালেব বলেন, ভাঙ্গনের তীব্রতা এতো বেশি যে ঘর বাড়ি সরিয়ে নেয়ার সময়ও পাচ্ছি না। সরকারের এই মুহুর্তে আমাদের জন্য সাহায্যর হাত বাড়ানো উচিত ।

 

কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও যমুনা নদীর ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে এ ইউনিয়নের মানুষ। গত ৭দিন হলো প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘর বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে ভেঙ্গে গেছে আমার ইউনিয়নের শতাব্দী প্রাচীন চরপৌলী এলাকার একটি মসজিদ, মাদ্রাসা সহ কবরস্থান। এমন ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষজন।

মাহমুদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.মাজেদুর রহমান তালুকদার বলেন, ভাঙন কবলিত মানুষ ঘর বাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে এখনো পর্যন্ত ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়োন বোর্ড। তবে এরপরও তারা বলছে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের কথা।

 

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মানের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলের মানুষকে যমুনা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *