নজর২৪, সিলেট- সিলেটের এমসি কলেজের হোস্টেলে তরুণীকে গণধর্ষণ মামলার আরেক আসামি ছাত্রলীগকর্মী মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে এমসি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কানাইঘাটের দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপির লামা দলইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সালিক আহমদ ছেলে।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম এর নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও জেলা ডিবির যৌথ অভিযানে জৈন্তাপুরের হরিপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর থেকে পলাতক ছিল মাসুম। তাকে গ্রেপ্তার করতে কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম’র নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম থানার বিভিন্ন এলাকাসহ সিলেটের অন্যান্য এলাকায় টানা অভিযান চালিয়ে আসার পাশাপাশি সে যাতে করে কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যেতে না পারে এজন্য সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি রাখে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তাসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার ৬নং আসামী মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, যে আত্মীয়ের বাড়িতে মাসুম আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখান থেকে রাতের বেলা লুঙ্গি পরে পালাতে গিয়ে গোয়েন্দা জালে আটকা পড়েন তিনি।
গ্রেপ্তার মাসুম এমসি কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী এবং ছাত্রাবাসে ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ছয় আসামির মধ্যে একমাত্র নিয়মিত শিক্ষার্থী। তার নামে ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ ছিল। ধর্ষণকাণ্ডের পর তার সিটটি কলেজ কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছে।
পুলিশ জানায়, পলাতক মাসুমকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল তৎপর ছিল। গতকাল সোমবার তিনি ‘এলাকায় আছেন’ এমন খবরে কানাইঘাট, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর এলাকায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে গোয়েন্দা দল খবর পায় মাসুম হরিপুর এলাকায় আছেন। পরে সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি যে আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন, সেখান থেকে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় পালাতে চেয়েছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে এই বেশ ধরেছিলেন, তবে কোথায় যেতে চাচ্ছিলেন; এ বিষয়ে কিছু বলেননি মাসুম।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদি হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলা ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। ধর্ষণকাণ্ডে এখন পর্যন্ত সাতজন গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি এখন পুলিশের হাতে। পলাতক আছেন তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক।
উল্লেখ্য, রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলার কচুয়া নয়াটিলা এলাকা থেকে রাজন ও তার সহযোগি আইনুলকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগে ওই মামলার আরেক আসামি মাহবুবুর রহমান রনিকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র্যাবের একটি দল। অন্যদিকে নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ। এছাড়া রবিবার সকালে সিলেট বিভাগের পৃথক দুই স্থান থেকে মামলার প্রধান আসামী সাইফুর রহমান এবং অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করা হয়।