পাবনা প্রতিনিধি- পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন জন সিনিয়র নার্স কর্তৃক হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে আসা প্রসূতি রোগীর সাথে অসদাচরনণ করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগি রোগীর স্বজন চাটমোহর পৌর সদরের আফ্রাতপাড়া মহল্লার মৃত আব্দুল মাজেদ মন্ডলের স্ত্রী ছালমা খাতুন গত ২৪ সেপ্টেম্বর চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছালমা খাতুনের বোনের মেয়ে উপজেলার শাহাপুর গ্রামের ইন্তাজ আলীর স্ত্রী মর্জিনা খাতুনের প্রসব বেদনা শুরু হলে সালমা খাতুন তাকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাত ১১টার সময় হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার পরে কোন ডাক্তার নার্সের দেখা না পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালের আয়ার সহায়তায় নার্সদের রুমের গেটে গিয়ে ডাকাডাকি করেন।
এসময় দু’জন নার্স সেখানে ঘুমিয়ে ছিলেন এবং রোগীর স্বজনের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় তীব্র রাগান্বিত হয়ে কর্তব্যরত নার্স পারুল, আন্না রোজারিও এবং আশা খাতুন রোগির স্বজনের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে হাসপাতাল থেকে রোগী সহ স্বজনদের তাড়িয়ে দেন। রোগীর অবস্থা করুন হওয়ায় স্বজনরা দ্রুত তাকে নিয়ে পৌর সদরের বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত একটি ক্লিনিকে নিয়ে প্রসূতিকে ভর্তি করান।
প্রসূতির স্বজন ছালমা খাতুন জানান, নার্সরা রুমে ঘুমিয়ে থাকায় অনেক ডাকা ডাকি করলেও তারা ওঠেননি। রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হলে যখন আমি তাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে উদ্যত হই এমন সময় একজন আয়ার ডাকা ডাকিতে তারা উঠেই উচ্চ স্বরে ডাকার অপরাধে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালা গালাজ শুরু করে। সেখানে সেবা-চিকিৎসা সহায়তা না করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ এবং পরে খুব খারাপ ভাবে আমাদের তাড়িয়ে দেন।
আশা খাতুন জানান, ঘটনার সময় রাত আনুমানিক ১০টা। আমি তখন ডিউটি করে রুমে ঢুকে ওয়াশরুমে ঢুকেছি। তখন ঐ রোগীর স্বজনরা এসে তীব্র স্বরে ডাকা ডাকি শুরু করে। আমার ওয়াশরুম থেকে বের হতে দেরি হওয়ায় রোগীর এক স্বজন আমার সাথে খুব খারাপ আচরণ করে। আমি কিছু বলার আগেই সে প্রসূতি রোগীকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে চলে যায়। অনেক রিকোয়েষ্ট করেও তারা রোগীকে হাসপাতালে আর ভর্তি করায় নি।
অভিযুক্ত নার্স পারুল খাতুন জানান, আমি জেনারেল ওয়ার্ডের নার্স। সেই সময় জরুরী বিভাগে অন্য রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকায় এ রোগীর কাছে যেতে পারিনি। পরে গিয়ে দেখি রোগি অন্য কোথাও চলে গেছে।
আন্না রোজারিও জানান, আমি জেনারেল ওয়ার্ডে ডিউটিতে ছিলাম। চিল্লা পাল্লা শুনে ওয়ার্ডে গিয়ে শুনি রোগি চলে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ ওমর ফারুক জানান, এ ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই এবং কেউ আমার নিকট কোন অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমি তদারকি করবো। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি, তবে কোন অভিযোগ আমি হাতে পাইনি। এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা সত্যিই কষ্টদায়ক। অভিযোগটি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।