নজর২৪, সিলেট- সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুমের (২৫) বাবা সালিক আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ। রোববার সকালে থানায় নিয়ে এসে সালিক আহমদকে ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
এমসি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজের বাবা কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্তরত রয়েছেন। তবে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কানাইঘাটের দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপির লামা দলইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সালিক আহমদ ছেলের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেননি।
সরকারি চাকুরিজীবি সালিক আহমদ তার ছেলে মাহফুজুরের কোন সন্ধান জানেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। একই সাথে তার ছেলে গণধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে প্রচলিত আইনে তার বিচার চেয়েছেন।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনার আসামি মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে ঘটনার পর থেকে তার নিজ এলাকা কানাইঘাটের বিভিন্ন স্থানে থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএমের নেতৃত্বে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে যাতে করে মাহফুজুর রহমান ভারতে যেতে না পারে, সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা এসেছে। সেই আলোকে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম স্যারের নির্দেশে সিলেট জেলার অধীনস্থ সকল থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু এ মামলার একজন এজাহারভুক্ত আসামি মাহফুজুর রহমানের বাড়ি কানাইঘাট। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। সীমান্ত এলাকায় পুলিশ তৎপর রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তারের সহযোগিতার জন্য তার পিতা সালিক আহমদকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। সন্ধ্যায় তাদের কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ৬-৭ জন নেতাকর্মী। এরপর দুইজনকে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা। খবর পেয়ে রাতে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে শনিবার সকালে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় মামলা করেছিলেন গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী।
মামলার আসামিরা হলেন- এম সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল হাসান ও মাহফুজুর রহমান মাসুম। এদের মধ্যে চারজন ওই কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে রোববার সকালে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া রাতে মামলার অন্যতম আসামি ছাত্রলীগ নেতা শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫) ও রবিউল ইসলামকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।