নজর২৪ ডেস্ক- দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (সেকেন্ড ওয়েভ) শুরু হচ্ছে। এমতাবস্থায় এখন পর্যন্ত যে খাতগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁর অন্যতম হলো দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। ঝুঁকি বিবেচনা করে ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা। আটকে আছে এইচএসসি পরীক্ষাও।
সার্বিক বিবেচনায় এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলেই মনে করছেন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের অনেকে। তাই আবারো বাড়তে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর সূত্রে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে।
তবে নতুন করে আরও কতদিন ছুটি বাড়ানো হবে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষণা দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কতদিন বাড়ানো হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছুটি বাড়ানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে শতভাগ করোনামুক্ত হওয়া সম্ভব নয়, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে কতটা সফলতা আসছে সে বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। বর্তমানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া দেশের সব প্রতিষ্ঠান সচল হয়েছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে কি না সেটিও আমাদের ভাবতে হচ্ছে।’
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে আগেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। সবার মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পাঠদান করানো হবে’ উল্লেখ করেন তিনি।
নওফেল আরও বলেন, ‘আগে থেকে প্রস্তুতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হবে না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা রয়েছে। স্কুল-কলেজ খোলার আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না।’
চলতি সপ্তাহে ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরও ১৫ দিনের মতো ছুটি বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, তবে এটি এক মাসও বাড়তে পারে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ছুটি বাড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আগামী ৩ অক্টোবরের আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘোষণা দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এ সময় পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে সংসদ টিভি এবং বেতারে ক্লাস পরিচালনা ছাড়াও অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও চলছে অনলাইন পাঠদান প্রক্রিয়া।