নজর২৪, কুড়িগ্রাম- কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধরলাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আবারও চতুর্থ দফায় বন্যা দেখা দেওয়ায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছে পড়েছে।
সেই সাথে উপজেলার ছয় ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৭শ হেক্টর জমির রোপনকৃত আমন তলিয়ে গেছে এবং শতাধিক পুকুরের মাছ রেব হয়ে যাওয়া মৎসচাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রবিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, চতুর্থ দফায় বন্যায় প্রান্তিক কৃষকদের চলতি মৌসুমে রোপনকৃত রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। অনেক কৃষক এ বছর অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে রোপনকৃত আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় একই জমিতে দুই থেকে তিনবার পর্যন্ত আমনের চারা রোপন করেও শেষ রক্ষা টুকুও পায়নি। এ ভাবে বার বার আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ও পুকুরের মাছ বের হওয়ায় কৃষকরা বড় দুচিন্তায় পড়েছেন।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নজর মামুদ গ্রামের কৃষক কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার ও বড়ভিটা ইউনিয়নের কৃষক সিরাজুল হক জানান, তাদের প্রত্যেকের ৮ থেকে ১০ বিঘা জমির রোপনকৃত আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পুকুরের মাছও বের হয়েছে। তাদেরসহ অন্য কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তারা দুচিন্তায় আছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানান, চলতি আমন মৌসুমে অতি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এ উপজেলায় ১ হাজার ৭শ হেক্টর আমনের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত রোপনকৃত ৫৫ হেক্টর আমন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের ক্ষয়-ক্ষতি দেখে রিপোর্ট গুলো জেলায় পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমে বেগুন-লাউসহ বিভিন্ন ধরণের ১শ ৫০ হেক্টর সবজি ভারি বৃষ্টিপাতে আক্রান্ত হয়েছে। যার ৫০% নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রবিবার দুপুর ১২টার পূর্বের ২৪ ঘন্টায় ২৯০ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, রবিবার সকাল ৯টায় ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান,ভানভাসিদের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। তবে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা তালিকা করে জেলায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে বানভাসি পরিবারের মাঝে ত্রান-সাসগ্রী বিতারণ করা হবে।