নজর২৪ ডেস্ক- সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছাত্রলীগের ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নগরীর শাহপরাণ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন এজাহারভুক্ত আসামিরা।
আসামিরা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও কলেজটিতে ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, একই শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।
তবে এজাহারভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
গণধর্ষণের মামলার ৫ নম্বর আসামী রবিউল ইসলাম শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ফেসবুকে লেখেন, ‘‘সম্মানিত সচেতন নাগরিকবৃন্দ, আমি রবিউল হাসান। আমি এম সি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। আপনারা অনেকেই চেনেন, আমি কেমন মানুষ তা হয়তো অনেকেই জানেন। গতকাল এম সি ছাত্রাবাসে গণধর্ষনের সাথে কে বা কারা আমাকে জড়িয়ে অনেক অনলাইন নিউজ করিয়েছেন। আমি এম সি কলেজ ছাত্র, কিন্তু আমি হোস্টেলে কখনই ছিলাম না, আমি বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমি যদি এই নির্মম গণধর্ষণের সাথে জড়িত নই। আমাদের পরিবার আছে। যদি আমি এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িত থাকি; তা হলে প্রকাশে আমাকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি কোনোভাবেই এই কাজের সাথে জড়িত নই। সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি সত্য না জেনে আমাকে এবং আমার প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগের নাম কোনো অপপ্রচার করবেন না। এমসি বিশ্ববিদ্যালের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণকারী সকল নরপশুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’
এর আগে এই মামলার ৬ নম্বর আসামী মাহফুজুর রহমান মাসুম ফেসবুকে লেখেন, ‘‘এ রকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান; প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন। একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে। আল্লাহ আমাকে নির্দোষ প্রমান করবেন। তবে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে আমাকে সুইসাইডের দিকে নিয়ে যাওয়া আপনাদের বিচার আল্লাহ করবেন।’’ বাকি আসামীদের কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।
সবুকে সরব থাকার পরও আসামীদের গ্রেপ্তার করতে না পারা প্রসঙ্গে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আমরা তাদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
এদিকে ধর্ষকদের বিচার চেয়ে শনিবার বিক্ষোভ শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস সংলগ্ন সিলেট-তামাবিল সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।