নজর২৪ ডেস্ক- এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজের ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূ (১৯) গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই দাবি জানান তারা।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এমসি কলেজের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। অধ্যক্ষের আশ্বাসের পর প্রায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। তবে আসামিদের গ্রেফতার করা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন তারা।
এসময় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘১২৮ বছরের কলেজের যে ঐতিহ্য, তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় কলঙ্ক লেগেছে কলেজে।’
এ ব্যাপারে এমসি কলেজের সাবেক ছাত্র ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই, আসামিদের গ্রেফতার করা হোক। এই ঘটনায় আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর কাছে কেউ কোনও তদবির করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘কেউ অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। ইতোমধে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলে দিয়েছি অপরাধী যারাই হোক, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। আমরা অপরাধীদের শাস্তি চাই।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন জানান, ছাত্রাবাসের ঘটনাটি সত্যি লজ্জাজনক। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তিনি জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনা আমাদের মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলেছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ছাত্রলীগের ৬ জন নেতাকর্মী গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় আজ শনিবার সকালে ৬ ছাত্রলীগ কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষিতার স্বামী। এজহারনামীয় আসামিরা হলেন, এম সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র।
ছাত্রলীগ ক্যাডারের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা:
ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি ছাত্রলীগ ক্যাডার এম. সাইফুর রহমানের বিরুদ্ধে শনিবার সকালে অস্ত্র আইনে মামলা করছে পুলিশ। এর আগে পুলিশ শুক্রবার রাত ২টার দিকে কলেজ ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে সাইফুরের রুম থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রচুর পরিমাণে দেশীয় ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। এই সময়ে কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও সাইফুর রহমানসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন ক্যাডার ছাত্রাবাসে বসবাস করতো। ছাত্রাবাসে অবস্থান করে কলেজ ক্যাম্পাস, টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় তারা নিয়মিত ছিনতাই ও অপহরণ করতো। রাতে ছাত্রাবাসে জুয়া ও মাদকের আসরও বসাতো বলে সূত্র জানায়।