আন্তর্জাতিক ডেস্ক- কার্যকরভাবে কোনো ভ্যাকসিনের ব্যাপক ব্যবহারের আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের জরুরি কর্মসূচির প্রধান ডা. মাইক রায়ান জানান, মহামারিটি রোধে একযোগে ব্যবস্থা নেয়া না হলে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। খবর: বিবিসি।
চীনে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আবিষ্কার হওয়ার পর প্রায় নয় মাসে এ ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখে পৌঁছেছে উল্লেখ করে ডা. মাইক বলেন, ‘আমরা যদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করি তবে আপনি যে সংখ্যা সম্পর্কে কথা বলছেন তা কেবল কল্পনাযোগ্যই নয়, তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবং দু:খের বিষয় যে এটি অবশ্যম্ভাবী।’
উত্তর গোলার্ধের অনেক দেশেই শীত আসার সাথে সাথে দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা গেছে। ডা. রায়ান ইউরোপে সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা এই বিশাল অঞ্চলের মধ্যে কোভিড-১৯ এর উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি ইউরোপের নাগরিকদের নিজেদের জিজ্ঞাসা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন যে তারা লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা এড়াতে পর্যাপ্ত কাজ করেছে কিনা এবং পরীক্ষা ও শনাক্ত, কোয়ারেন্টাইন বা সামাজিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলো কার্যকর করা হয়েছে কিনা।
‘এই সংখ্যা এড়াতে যা করা দরকার তা করার জন্য কি আমরা প্রস্তুত?,’ কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সব কিছু করার আহ্বান জানিয়ে এই প্রশ্ন রাখেন ডা. মাইক রায়ান।
গত বছরের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম যখন ‘অজানা’ একটি ভাইরাস সংক্রমণের খবর প্রকাশিত হয়, তখন মানুষ ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেনি যে সেই ভাইরাসটি পরের ৬ মাসের মধ্যে পুরো পৃথিবীকে ওলট পালট করে দেবে।
শুরুর দিকে যখন ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার খবর প্রকাশিত হওয়া শুরু করে তখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশের কর্তৃপক্ষই সংক্রমণটিকে ততটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই বাড়তে থাকে, তখন পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশ বিভিন্ন রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে থাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে।
উহান শহরে উদ্ভূত ভাইরাসটি – যেটি বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়। এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ২১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৫৫ জন এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭৫৪ জন।