আন্তর্জাতিক ডেস্ক- চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে হাজার হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে সরকারি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মুসলিমদের কবরস্থান, মাজারও ধ্বংস করা হচ্ছে। গত তিন বছরে ওই প্রদেশের এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার কাজ আরও বাড়িয়েছে চীন। মসজিদ, মাজার ও কবস্থানের বেশিরভাগই এ সময়েই ধ্বংস করা হয়।
অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট(এএসপিআই)- এর প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান, আল জাজিরা।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং প্রদেশটি সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত। চীনের বিরুদ্ধে ওই প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ নিয়মিত উঠে আসে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে। চীন সরকারের হিসেব অনুযায়ী শিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের ২৪ হাজার মসজিদ রয়েছে।
থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান এএসপিআই জানিয়েছে, ২০১৭ সালের পর ৩০ শতাংশ মসজিদ ধ্বংস ও আরও ৩০ শতাংশ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১০ লাখ উইঘুর ও তুর্কিভাষী মুসলিমকে রাখা হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পে।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এএসপিআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, শিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুমকি ও কাশগর শহরের আশেপাশে ধ্বংসযজ্ঞ বেশি চালানো হয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের ১৬ হাজার মসজিদ বা ধর্মীয় পবিত্র স্থাপনা ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাড়ে আট হাজারের বেশি মসজিদ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্যাটেলাইটে তোলা ছবি, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন সরকারি নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে এএসপিআই।
এএসপিআই-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘু নিপীড়নের সঙ্গে সংযোগ আছে এমন আরও ৩৮০টি বন্দীশিবিরের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে বন্দীশিবিরের অস্তিত্বও নিয়মিত অস্বীকার করে আসছে চীন। বেইজিংয়ের দাবি— শিনজিয়াং প্রদেশের দারিদ্র্য এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ মোকাবিলায় এইসব কেন্দ্রে মূলত জাতীয়তাবাদ ও আদর্শের দীক্ষা দেওয়া এবং চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়।
এর আগে গত বছর ওয়াশিংটন ভিত্তিক উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজারের মত মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে চীনা প্রশাসন।
এছাড়া উইঘুর মুসলিম নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করার অগিযোগ উঠে চীনা সরকারের বিরুদ্ধে। তবে চীন সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।