নজর২৪ ডেস্ক- দেশে সরকার স্থিতিশীল থাকুক, তা একটা গোষ্ঠী চায় না বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতির পিতার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ প্রদান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ঐ আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৭৫ এর ১৫ আগস্ট যে ঘাতকের দল জাতির পিতাকে হত্যা করেছিলো, তার দোসর যারা, তারা এ দেশে কখনও স্থিতিশীল সরকার থাকুক তা তারা চায়নি, যার জন্য মাঝে মাঝেই চেষ্টা করে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। এ প্রচেষ্টা যখন চালায় তখন আমরা দেখি অগ্নিসংযোগ করে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করা অথবা মানুষকে খুন করা অথবা নানাধরনের ঘটনা ঘটানো। আমাদের সব অবস্থাই মোকাবিলা করতে হয়।”
মানুষের আস্থা ও সমর্থন আছে বলেই এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওপর এদেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আছে, যে কারণে তারা আমাদের বারবার নির্বাচিত করেছে বলেই তাদের সেবা করতে পেরেছি। দীর্ঘ সময় একটু ক্ষমতায় থাকতে পেরেছি বলেই উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে। উন্নয়নগুলো করতে পারছি যার সুফল দেশের মানুষ ভোগ করছে।
আলোচনায় ৪৬ বছর আগে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে জাতির পিতা দেয়া ভাষণের বিভিন্নর দিক আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। এতটা দিন পরও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক জাতির পিতা ভাষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে সময় যে কথাগুলো তিনি বলে গিয়েছিলেন, আমরা কিন্তু এখনও আন্তর্জাতিকভাবে সে ইস্যুগুলো নিয়েই কাজ করছি।
কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বিশ্বের মানুষের মুক্তি কামনা করে শেখ হাসিনা ভাষণে এজন্য বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আবারও অর্থনীতির চাকা সচল হোক, সকল মানুষ সুন্দরভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারুক, সেটাই আমরা চাই। সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সারাবিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য খাদ্য সংকটের বিষয়ে তাঁর সরকারের আগাম সতর্কতার বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে হয়ত দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে যেন কোনোমতে সেই দুর্ভিক্ষের ছোঁয়া না লাগে। তাই, আমরা যতটুকু পারি খাদ্য উৎপাদন করা, খাদ্য বিতরণ করা, দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য দেওয়া এবং খাদ্য নিশ্চয়তা দেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ৩১ দফা নির্দেশনার মাধ্যমে সীমিত আকারে অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের কারণে আমাদের জিডিপির যেটা টার্গেট ছিল সেটা আমাদের পক্ষে অর্জন সম্ভব হয়নি। এবার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশের মত জিডিপি অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা আশা করি আগামীতে আমাদের প্রবৃদ্ধি আমরা আরো বেশি অর্জন করতে সক্ষম হব এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০ শতাংশ থেকে দারিদ্রের হার কমিয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে এনেছি। আমরা এটা আরো কমাতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একটা সুন্দর জীবন আমরা উপহার দিতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতিটি মানুষকে, যারা গৃহহীন, তাদের গৃহ নির্মাণ করে দেব। যারা ভূমিহীন, তাদের ভূমির ব্যবস্থা করে দেব। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। পুষ্টির নিশ্চয়তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। পাশাপাশি, বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি। সব মানুষ যাতে এই প্রণোদনার সহযোগিতাটা পায়, সে ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি।