নজর২৪ ডেস্ক- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, চলতি বছরের ২৪ জুন নুরসহ কয়েকজন তাঁর সঙ্গে নীলক্ষেতে দেখা করেন বিষয়টি সমাধান করার জন্য। কিন্তু নুর ওই ছাত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কেউ এই তথ্য বা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় ফেসবুক লাইভে এসে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এই ঘোষণা দেন।
লাইভে নুরুল হক নুর বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে কিংবা নীলক্ষেত এলাকায় সিসি টিভির ফুটেজ রয়েছে। পাশে নিউমার্কেট থানা রয়েছে। তো, এই একটা তথ্য যদি প্রমাণ করতে পারেন, আমি নীলক্ষেতে ২৪ জুন ওই মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছি বা বিষয়টি মীমাংসার ব্যাপারে কথা বলেছি, তাহলে আমি সমস্ত অভিযোগ মাথা পেতে নেব। রাজনীতি থেকে আমি সরে দাঁড়াব। এবং নিজেকে অপরাধী বলেই মনে করব ও আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলব।’
নুরুল হক নুর বলেন, ‘ওই মেয়েকে যারা চেনেন বা সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোক আছেন, তারা একটি বিষয় খালি প্রমাণ করুক যে, মেয়েটির সঙ্গে আমরা ২৪ তারিখ মীমাংসার জন্য নীলক্ষেতে বসেছি এবং সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। এবং সেখানে আমরা তাঁকে হুমকি দিয়েছি। এটা যদি প্রমাণ করতে পারেন, দ্যাটস এনাফ। আর কোনো কিছুর দরকার হবে না। আমি অপরাধ মাথা পেতে নেব।’
‘মেয়েটি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, পুলিশ এজাহারভুক্ত করেছে। আমি জানি না পুলিশ আসলে কোন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাকে এজাহারভুক্ত করল?’ বলে প্রশ্ন রাখেন ভিপি নুর।
নুরুল হক নুর আরো বলেন, ‘আমি তো জানি, আমি অপরাধী কিনা। এখনো সত্য কথা বলছি, যে নিজের বুকে জোর আছে। এই মেয়ের সঙ্গে আমার এই ধরনের কোনো কথা-বার্তা হয়নি এবং আমি তাঁকে হুমকিও দেইনি। আমি কোনো অপরাধ করিনি।’
উল্লেখ্য, প্রসঙ্গত, গত রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ধর্ষণের অভিযোগে মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ভিপি নুরকে ধর্ষণে সহযোগিতাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে নুর ও তার সহযোগীরা শাহবাগ থেকে মৎস ভবনের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় নুর ও তার ৬ সহযোগীকে মৎস ভবনের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। রাত ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়।
এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে নুর ও তার সহযোগী সোহরাবকে ডিবির কার্যালয়ে নেয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় নুরকে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্র অধিকারের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে গাড়ির সামনে বসে স্লোগান দেন। নুরের স্ত্রী তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে গাড়ির সাথে ঝুলে পড়েন। পরে লাঠিচার্জ করে তাদের সরিয়ে নুরকে নিয়ে যায় পুলিশ। রাত পৌনে ১টার দিকে মুছলেখা দিয়ে ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পান নুর।