সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: পঁচা পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরের আমদানিকারকরা। আমদানিকৃত ৪০ ট্রাক পেঁয়াজসহ ভারতে এখনও পর্যন্ত আটকে থাকা ১২৫ ট্রাক পেয়াজে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
আকষ্মিক ভারত সরকার গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর ভারতের ওপারে পাড়ে আটকা পড়ে যায় সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর ব্যবহারকারী আমদানিকারকদের ১৬৫ ট্রাক পেয়াজ। পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৭’ই সেপ্টেম্বর) শর্ত সাপেক্ষে পূর্বের এলসি করা ডকুমেন্ট পাসকৃত পেঁয়াজের ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয় ভারত সরকার। তবে টানা ৭-৮ দিন ট্রাকে আটকে থাকায় এসব পেঁয়াজগুলো অধিকাংশই খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ৪০টি ট্রাকে আমদানিকৃত ৯২৫ মেট্রিক টন ভারতীয় পেয়াজে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে দুই কোটি টাকা।
ভোমরা স্থল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ভারত সরকারের পেয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দেশে এসেছে পূর্বের এলসি করা ৩১ ট্রাকে ৭২১ মেট্রিকটন, ২০ সেপ্টেম্বর (রোববার) ৫টি ট্রাকে ১০৮ মেট্রিকটন, ২১ সেপ্টেম্বর (সোমবার) চারটি ট্রাকে এসেছে ৯৬ মেট্রিকটন ভারতীয় পেঁয়াজ।
ভোমরা স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, টানা ৭-৮ দিন পেঁয়াজ ভারতে আটকা পড়ে থাকায় প্রতিটি ট্রাকের ৫০ শতাংশ পেয়াজ নষ্ট হয়ে খাবার অনুপযোগী হয়ে গেছে। আরও ৫-৭টি ট্রাক দেশে প্রবেশের কথা রয়েছে। তাছাড়া যে পেঁয়াজগুলো ভালো রয়েছে সেগুলোও এখন ঢাকা, চট্রগ্রাম বাইরে নিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা নেই। স্থানীয় লোকাল বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই পেঁয়াজ দেশে ঢুকিয়েও বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, প্রতি ট্রাক পেঁয়াজের মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। প্রতিটি ট্রাকে ব্যবসায়ীদের পাঁচ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তাছাড়া ওপারে যে ট্রাকগুলো আটকা রয়েছে সেই পেঁয়াজগুলো আর খাওয়ার মত অবস্থায় নেই। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রায় ১০ কোটি টাকার লোকসান। তাছাড়া ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। যে পেয়াজগুলো এখন আসছে সেগুলো পূর্বের এলসি করা ও সেগুলোর ডকুমেন্ট পাস ছিল।
সাতক্ষীরার বড় বাজারের পাইকারি পেয়াজ ব্যবসায়ী মেসার্স সাকিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী কামরুজ্জামান মুকুল বলেন, বর্তমানে ভারত থেকে যে পেঁয়াজ আসছে তার প্রায় সবই পঁচা। সেই পেঁয়াজ বাছাইকরাও সম্ভব হচ্ছে না। পাইকারি প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৫০-৬০ টাকায়। তবে পেঁয়াজের ক্রেতাও খুব কম।
ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মহসিন হোসেন বলেন, হঠাৎ পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পর ভারত থেকে ৪০ টি ট্রাকে ৯২৫ মেট্রিকটন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। তবে মঙ্গলবার (২২শে সেপ্টেম্বর) কোন ট্রাক এখনো পর্যন্ত প্রবেশ করেনি। ভারত কেন পেয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করলো সেটির বিষয়ে লিখিতভাবেও কোন কিছু জানায়নি।