অঝোরে কাঁদলেন ভিপি নুরের স্ত্রী, বললেন ‘এভাবে মিডিয়ার সামনে আসতে হবে ভাবিনি’

নজর২৪ ডেস্ক- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ঢাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, আটক ও মুক্তির বিষয়ে মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী মারিয়া আক্তার লুনা।

 

রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার রাতে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের লুনা বলেন, ‘আমাদের লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। এটা মিথ্যা মামলা, এটা ষড়যন্ত্র। এটা আমি কেন, আপনারাও জানেন। যারা (পুলিশ সদস্যরা) আমার স্বামীকে এখানে নিয়ে এসেছে তারাও সেটা জানেন। কী হয়েছে দেশবাসী জানে। সবাই জানে।’

 

নুরের বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ ঘৃণ্য ও ভিত্তিহীন দাবি করে লুনা আরও বলেন, ‘আমি আমার হাসবেন্ডকে চিনি। সে ছোটবেলা থেকে কোন ধরনের কোন প্রকৃতির আমি জানি। ও কখনোই এ ধরনের কাজ করতে পারে না এবং সেটা তো সাপোর্ট করার কোনও প্রশ্নই আসে না। ওর মন-মানসিকতা, ওর মেন্টালিটি এমন না। ওর একটা মেয়ে আছে। আমার সবচেয়ে কষ্টের জায়গা এটাই- মেয়েটা (অভিযোগকারী) ওর বিরুদ্ধে এমন একটা অভিযোগ করেছে যা ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। এটা সম্পূর্ণ মানুষের প্ররোচনায় পড়ে করা হয়েছে।’

 

কথাগুলোতে বলতে বলতে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন ভিপি নুরের স্ত্রী। এমন অভিযোগের কারণে তার পরিবারকে সবার কাছে ছোট হতে হচ্ছে বলেও সাংবাদিকদের জানান লুনা।

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ৫ বছরের সংসার জীবন। আমি কি বলতে পারবো না আমার স্বামী কেমন? আমার আসলে কোনও ভাষা নেই, আমি বলতে পারছি না এমন একটা মিথ্যা, গুজব মামলায় ওকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এমন পরিস্থিতির শিকার কখনোই হইনি। আমি কখনও ভাবি নাই আমাকে এভাবে মিডিয়ার সামনে আসতে হবে।’

 

লুনা বলেন, ‘আমি আমার সন্তান লাইভ দেখছি ওকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমার সন্তান তখন দরজায় গিয়ে বলছে বাবা আসছে বাবা আসছে। এটা অন্যায়।’

 

পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে কিছু জানানো হয়েছিল কিনা- এমন প্রশ্নে লুনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনও কিছু জানানো হয়নি। ওকে যখন নিয়ে আসা হয় তখন বলেছে, নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হবে। কিন্তু মিথ্যা বলে ওকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে নিয়ে গেছে। গাড়ি দেখে তখন বুঝেছি, পুলিশ ওকে নিয়ে যাচ্ছে।’

 

‘আমার হাসবেন্ড শারীরিকভাবে এমনিতেই অসুস্থ, কয়েকবার ওকে মারা হয়েছে। ওর বুকের পাজরে সমস্যা আছে, মেরুদণ্ডের দুটি হারে ফ্র্যাকচার। আমিও আওয়ামী পরিবারের একজন সন্তান। এভাবে আমাকে আমার পরিবারকে মিডিয়ার সামনে আসতে হবে ছোট হতে হবে ভাবিনি। এটা মিথ্যা মামলা, একটা ষড়যন্ত্র।’

 

এর আগে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ষণের মামলার পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগেও তাকে আটক করা হয়। এরপর তাকে নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা শেষে রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ছেড়ে দেয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

 

রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়।

 

এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *