নজর২৪ ডেস্ক- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সবশেষ নির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের সমর্থকদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন তারা। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন— শাহবাগ থানার উপপরির্দক (এসআই) গোলাম হোসেন (৪২) ও এসআই সুজন চন্দ্র দে (৩৮), রমনা থানার কনস্টেবল মো. জাহিদুল ইসলাম (২৮) ও মো. মনজুরুল হক (৪১) এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমের কনস্টেবল কামাল হোসেন (২৫)।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ পরিদশর্ক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মৎস্য ভবনের সামনে নুরুল হক নুরের সমর্থকদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের ঢামেক হাসপাতালে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা প্রয়োজন মনে করলে তাদের ভর্তি করা হবে।
জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগে এক তরুণী মামলা করার পর তা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে সোমবার রাত ৮টার দিকে এই বিক্ষোভ করছিল নূরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বের হওয়া মিছিলটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গে গোলযোগ বাঁধে। পরে নূরসহ সাতজনকে সেখানে আটক করে পুলিশ।
তখন ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স) ওয়ালিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশকে মারধর করার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।”
তবে তার ১০টার দিকে নুরকে দেখা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পুলিশের হামলায় আহত পরিষদের নেতা-কর্মীরা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
তখন জানতে চাইলে মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “নুরকে আটকই করা হয়নি। অনুমতি ছাড়া মিছিল করায় তাকে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, “নূরকে প্রাইমারি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। সে কিছুটা অসুস্থ্য বোধ করছে। প্রাইমারি ট্রিটমেন্টের পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। সাত জনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের সবাইকেই ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় এ মামলাটি করেন। মামলায় মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে নুরুল হক নুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে। ধর্ষণের স্থান হিসেবে লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে হাসান আল মামুনের বাসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বাদী শিক্ষার্থী ঢাবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকেন।