নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈরি আবহাওয়ার কারণে পুকুর জলাশয়ের পানিতে গ্যাসের সৃষ্টি হয়ে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়ায় মাছ মরে যাওয়ার ফলে মৎসচাষীদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, গত বুধবার থেকে হঠাৎ করে মাছ মরার কারণে মৎস্যচাষীরা বিপাকে পড়েছেন। নিরুপায় হয়ে তারা মাছ ধরে এনে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে কম দামে বিক্রি করছে।
আত্রাই উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার কারণে পুকুর জলাশয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, উপজেলার বান্ধাইখাড়া, হাটকালুপাড়া, শাহাগোলা, বহলা, চাপড়াসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পুকুর, জলাশয় গুলোতে মাছ মরার দৃশ্য দেখা গেছে। হাটে-বাজারে গিয়েও একই চিত্র চোখে পড়ে। শত শত মৎস চাষিরা বাজারে মরা মাছ নিয়ে ভিড় জমায়। এলাকার লোকজন মাছের আড়ৎ গুলোতে ভিড় জমায়।
বুধবার সকালে থেকে উপজেলার আত্রাই স্টেশন বাজার মাছের আড়ৎ, ভবানীপুর মাছ বাজার, নওদুলী মাছ বাজার, বান্ধাইখাড়া মাছ বাজারসহ বিভিন্ন মাছের আড়ৎ গুলোতে লোকজনের ভিড় লক্ষ করা গেছে। ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও সিলভার মাছ গুলো ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত মাছ ক্রয় করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার মাছ মরার কারণে না কিনেই বাড়িতে ফিরে গেছে।
হাটকালুপাড়া গ্রামের মৎসচাষী আসাদুজ্জামান টকি জানান, সকালে জানতে পারেন তার পুকুরের মরা মাছ ভাসছে। বিষয়টি জেনে পুকুরে গেলে ততক্ষণে অনেক মাছ মরে ভেসে ধারে লাগে। পরে মাছ গুলো কিছু অংশ তুলে বাজারে নেয় বাকি মাছ পুকুরে মরে পচে গেছে।
একইভাবে উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের মৎসচাষী আলম সরদার জানান, তার পুকুরের অর্ধেকের বেশে মাছ মরে গেছে। বাকি কিছু মাছ পকুরে রয়েছে। এতে করে তার প্রায় ৩ লক্ষাধিক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, দুর্যোগ পরবর্তি সময়ে পুকুর গুলোতে অক্সিজেনের সল্পতা দেখা দেয়। আবার অনেক সময় এসিড বৃষ্টি অর্থাৎ বায়ুমন্ডলে যদি কোন কারণে এসিটিক বাতাস প্রবাহিত হয় আর ঠিক ঐ সময়ে যদি বৃষ্টি হয়। তাহলে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের এসিডটা মিশ্রিত হয়ে পানিতে পড়ে। আর তখন পানিতে অক্সিজেন সল্পতা দেখা দেয় এবং পানির চঐ কমে যায় যার ফলে পানি এসিটিক হয় এবং মাছ মরে ভেসে ওঠে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকাও প্রস্তুত করা হচ্ছে।