শাহবাগ থেকে ফিরছিলাম। আজ (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটা। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। রমনা পার্কের সামনের রাস্তাটা বেশ ফাঁকা। বাইকের স্পিড সিক্সটি। আচমকা রাস্তার মাঝখানে ভূতের মতো উদয় হলো কালো বোরখা কালো হিজাব। ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে পড়লে নিরাপদেই পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে পারি। নাহ, একপা সামনে এগোয় আবার দুইপা পেছনে। একেই বলে ফাঁপড়। হাইড্রোলিক ব্রেকটা চেপে ধরলাম। বৃষ্টিভেজা পিচ্ছিল রাস্তা, যা হওয়ার তাই হলো। বাইক ঠাই দাঁড়িয়ে কিছুদূর পিছলে ‘কাইত’। বোরখাওয়ালির গায়ে ছোঁয়াও লাগলো না। আমি ছিটকে পড়লাম মধ্যরাস্তার ডিভাইডারে।
ডান হাতের কনুইটা এবার বোধহয় গেছে, আর ছাল-বাকল ওঠা তো মামুলি বিষয়। এক্সিডেন্ট বা আহত হওয়াটা মূল ঘটনা নয়। আসল ঘটনা অন্যখানে।
রাস্তার অপজিটের ইন্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট আর একটু দূরের ঢাকা ক্লাবের সামনে থেকে লোকজন ছুটে আসলো। ডিভাইডার ঘেষে পড়ে থেকেই দেখলাম, কালো বোরখা একবারও ফিরে দেখলো না। থামলো না এক মুহূর্ত। ফুটপাত দিয়ে হন হন করে এগিয়ে পার্কের গেইটে অন্ধকারে মিশে গেল। লোকজন বাইক আর আমাকে টেনে তুললো। বুড়ো মতো একজনকে বলতে শোনলাম, জায়গাটা ভালো না। দোষ আছে।
এদিকে আমাকে ঘিরে তৈরি হওয়া জটলায় অল্প সময়েই লেগে গেল যানজট। মৎস্য ভবনের সামনে থেকে তেড়ে এলো এক ট্রাফিক পুলিশ। তিনি বললেন, গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবেন তো.. দেখেন স্টার্ট নেয় কিনা! বাইকের বাম্পার বাঁকা লুকিংগ্লাস ভাঙা, তবে স্টার্ট নিলো।
কাছের কোনো ফার্মেসিতে ক্ষত ড্রেসিং করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওই ট্রাফিক বললেন, জানে বাঁচছেন শোকরানা করেন। গত সপ্তাহেই তো.. এমন বৃষ্টির মধ্যে এক বোরকাওয়ালিকে বাঁচাতে গিয়া ট্রাকের বাড়িতে সিএনজিওয়ালা একদম স্পট ডেড। ঠিক এই জায়গাতেই।
আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের সাথে ঘটা ভৌতিক এই ঘটনা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন গণমাধ্যমকর্মী বিপুল হাসান। ফেসবুক থেকে সংগৃহীত। (ফাইল ছবি)