নজর২৪ ডেস্ক- বাড়িতে একা পেয়ে তিন দিন ভাতিজিকে ধর্ষণ করেন আপন চাচা। সহজ-সরল ওই কিশোরী চাচার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে, জন্ম দেয় কন্যা সন্তানও। ওই কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নিয়ে নানা কল্পনা-জল্পনা শুরু হলে ডিএনএ টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে চাচাই ধর্ষণ করে তাকে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের হেসিয়ারা গ্রামে। অভিযুক্ত সোহেল (৪৫) হেসিয়ারা গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আখতার হোসেন। গতকাল শনিবার ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে এ কথা জানান তিনি।
গত ১৩ জুন ওই কিশোরীর বাবা তার আপন ভাই সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরের দিনই সোহেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। আদালতে ওই কিশোরী তার চাচা সোহেলকে দায়ী করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এরপর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আর জুন মাসের শেষ দিকে সিজারের মাধ্যমে ওই কিশোরী কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। পরে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্থতায় কিশোরীর মেয়েটিকে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে এক নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে দত্তক দেওয়া হয়। সন্তানটিকে দত্তক দেওয়ার শর্ত ছিল, ডিএনএ পরীক্ষাসহ মামলার তদন্তের স্বার্থে যে কোনো সময় শিশুটিকে হাজির করতে হবে। পরে কিশোরীর সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।
তবে সোহেল নামের এই ধর্ষককে কারাগারে আটকে রাখা গেছে মাত্র এক মাস। সেই ধর্ষক ছেলেকে বাঁচাতে ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার বাবাকে বাড়িছাড়া করার ঘোষণা দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিলেন ধর্ষকের বাবা আবদুল মান্নান। চাপ দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছিলেন ধর্ষকের এক মামা, এক ফুপুসহ মামাতো ভাই।
এ পরিস্থিতিতে বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের চাপ ও ভিটে ছাড়া করার ভয়ে কিশোরীর বাবা অসহায় অবস্থায় নিমরাজি থাকায় জামিনে বের হয়ে আসে তার ভাই ধর্ষক সোহেল। পরবর্তীতে গলায় ফুলের মালা পরে মোটরসাইকেল শোডাউন ও আনন্দ উল্লাস করে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করেছে সে। তার মোটরসাইকেল শোডাউন ও উল্লাসের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গনমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি ভীষণ আলোচিত হয়।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আখতার হোসেন জানিয়েছেন, ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে ধর্ষক চাচা সোহেলের সম্পৃক্ততা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্রুত মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।