নজর২৪ ডেস্ক- শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী সাহেব হুজুরকে শেষবারের মতো দেখতে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালের সামনে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন। হাজারো মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইন শৃঙ্কলা বাহিনী। যেকোনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, রয়েছে র্যাবের টহল।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের সামনের রাস্তা যানবাহন শূন্য রাখার জন্য দয়াগঞ্জ মোড়ে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। হাসপাতালের সামনের রাস্তায় কোনও যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
দয়াগঞ্জ মোড়ে দেওয়া ব্যারিকেডে দায়িত্বে থাকা এসআই দীপংকর বলেন, ‘হাসপাতালের সামনের রাস্তায় কোনও গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতনদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’
এদিকে আজগর আলী হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেছে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও আলেমদের একাংশ। তারা হাসপাতালের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পুলিশ বাধা দেওয়ায় কিছু সময় বাকবিতণ্ডা হয়।
ঢাকায় জানাজার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন একজন আলেম। তিনি বলেন, মুরুব্বিরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য বসেছেন। ওখান থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে রাত ৯টার দিকে মাওলানা আহমদ শফীর ছেলে মাওলানা আনাস মাদানী ঘোষণা দেন, তার বাবার মরদেহ চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তার বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর থেকেই ঢাকায় জানাজার দাবিটি জোরালো হয়।
লালবাগ থেকে হাসপাতালের সামনে এসেছেন মাওলানা মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘হুজুরের অসংখ্য ছাত্র ঢাকায় রয়েছে। উনাকে ভালোবাসে এমন মানুষের সংখ্যাও অসংখ্য। আমরা চাই,ঢাকায় একটা জানাজা হোক।’
এর আগে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা আল্লামা আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে তাকে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শতবর্ষী আল্লামা আহমদ শফী দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে এর আগেও দফায় দফায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।
১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করা শাহ আহমদ শফী হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় শিক্ষালাভ করেন। পরে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালনের পর গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর এই মাদরাসার মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি নেন তিনি।