খেলা দেখতে গিয়ে ট্রাম্পের হাতে যৌন হয়রানির শিকার মডেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ নতুন নয়। তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলাও দায়ের করেছিলেন এক মার্কিন নারী। তবে এবার খেলাধুলার জগৎ জড়িয়ে যাওয়াতেই বাড়তি একটু বিস্ময় জাগছে।

 

সাবেক এক মডেল দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ১৯৯৭ সালে তাঁকে যৌন হয়রানি করেছিলেন। দুই দশক ধরে ‘অসুস্থ’ ও ‘নিপীড়িত’ বোধ করা সেই নারীর দাবি— ইউএস ওপেনের একটি ম্যাচ দেখতে গিয়েই ট্রাম্পের এমন আচরণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। দ্য গার্ডিয়ানের কাছে বিশেষ এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অ্যামি ডরিস।

 

১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রেমিক জেসন বিনের (ফ্যাশন ম্যাগাজিন প্রকাশক ও উদ্যোক্তা) সুবাদে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হয় ডরিসের। ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ভিআইপি বক্সে ইউএস ওপেনের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন দুজনে। ম্যাচ চলাকালীন সময়ে ভিআইপি বক্সের বাথরুমের বাইরে তাঁকে যৌন হয়রানি করেছিলেন ট্রাম্প, এমনটাই দাবি করেছেন ডরিস।

 

সে সময় ২৪ বছর বয়সী ছিলেন ডরিস। তাঁর দাবি, ট্রাম্প তাঁকে জোর করে চুমু খেয়েছিলেন, মুঠোতে হাত আটকে রেখেছিলেন যাতে ডরিস নড়তে না পারেন এবং আরও অনেক কিছুই করার চেষ্টা করেন।

গার্ডিয়ানের কাছে সে সময়টার অনুভূতির কথা জানিয়েছেন ডরিস, ‘তিনি জোর করে আমাকে চুমু খাচ্ছিল এবং আমি তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমি জানি না এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য কী শব্দ ব্যবহার করা হয় কিন্তু আমি দাঁত ব্যবহার করে তা থামানোর চেষ্টা করেছি। আমার ধারণা সেও ব্যথা পেয়েছিল।’

 

ফ্লোরিডাবাসী ডরিস ২৩ বছর আগেও ফ্লোরিডাতেই ছিলেন। সে সময়কার প্রেমিক বিনের সঙ্গে নিউইয়র্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পকে ‘প্রিয় বন্ধু’ দাবি করে বিনই ম্যানহাটনে অবস্থিত ট্রাম্প টাওয়ারে নিয়ে গিয়েছিলেন ডরিসকে। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প শুরু থেকেই বাজে আচরণ করছিলেন। কিছু লোক আছে যাদের ধারণা, তারা যা চায়, তাই করতে পারবে… অথচ আমি সেখানে আমার প্রেমিকের সঙ্গে গিয়েছি।’

 

পুনর্নির্বাচনের অপেক্ষায় থাকা ট্রাম্প তাঁর আইনজীবীদের মাধ্যমে ডরিসের এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তবে ডরিস, সেদিনের ঘটনার প্রমাণ হিসেবে ইউএস ওপেনের সেদিনের টিকিট ও ট্রাম্পের সঙ্গে তোলা ছয়টি ছবি দেখিয়েছেন। ঘটনার সময় ৫১ বছর বয়সী ট্রাম্প বিবাহিত ছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রী মারলা ম্যাপলস সেদিন ডরিস, ট্রাম্প ও বিনের সঙ্গে ছিলেন না।

 

ডরিসের দাবি, ঘটনাটা কাছের মানুষদের কাছে খুলে বলেছিলেন তিনি। তবে নিউইয়র্কে থাকা এক বন্ধু ও মাকে সে ঘটনা জানিয়ে স্বস্তি পাননি। কোনোভাবেই মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করাটা কাটিয়ে উঠতে না পারায় পরবর্তী সময়ে এক থেরাপিস্টের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ডরিস। ২০১৬ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকজন অভিযোগ তোলায় ডরিস ভেবেছিলেন তিনিও প্রকাশ্যে আনবেন তার অভিজ্ঞতা।

 

কিন্তু যমজ দুই কন্যার মা ডরিস পরিবারের কথা ভেবে তখন চুপ ছিলেন, ‘আমার এখন মনে হচ্ছে, মেয়েদের বয়স ১৩ হতে যাচ্ছে এবং তাদের জানানো দরকার, কাউকে কখনো জোর করে কিছু করতে দেওয়াটা ঠিক নয়। আমি চাই তাদের কাছে আদর্শ হতে। আমি চাই তারা জানুক, আমি চুপ থাকিনি; অন্যায় করেছে, এমন একজনের বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *