অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল ‘হাটহাজারী মাদ্রাসা’

নজর২৪ ডেস্ক- চট্টগ্রামের হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিকে অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও উত্তেজনার মধ্যেই কওমি মাদ্রাসাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।

 

এ বিষয়ে হাটহাজারীর ওই মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও অধ্যক্ষকে বৃহস্পতিবার একটি চিঠি পাঠিয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ২৪শে অগাস্ট কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়া হয়েছিল মূলত কয়েকটি শর্তে- এর মধ্যে দুটি হল, কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু করা এবং পরীক্ষা গ্রহণ করা।

 

কিন্তু চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম আরোপিত শর্তগুলো যথাযথভাবে পালন করেনি বলে মাদ্রাসাটি পুনরায় আদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। মাদ্রাসাটি ‘হাটহাজারী মাদ্রাসা’ নামে পরিচিত।

 

বুধবার থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারসহ ৬টি দাবিতে মাদ্রাসায় বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্ররা। তাঁরা মাদ্রাসার সব কটি ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। আনাসসহ কয়েকজন শিক্ষকের কক্ষে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীকে মাদ্রাসার ভেতরে পেয়ে মারধর করেন ছাত্ররা। আহত অবস্থায় তিনি এখন নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

তাদের আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে পরে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শুরা কমিটি। তবে সেই আন্দোলনের কোন কথা ওই প্রজ্ঞাপনে নেই।

 

আজ বৃহস্পতিবারও হাটহাজারী মাদ্রাসা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। মাদ্রাসার ভেতরে শিক্ষার্থীরাও তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মাদ্রাসার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন, যেন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।

 

এদিকে হেফাজতে ইসলামের নেতারা জানান, আমির আহমদ শফী ও মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর মধ্যে দীঘদিনের দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ জুন জুনায়েদ বাবুনগরীকে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শেখ আহমেদকে। তিনি হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

 

এছাড়া বাবুনগরীর ভাগিনা মাদ্রাসার শিক্ষক আনোয়ার শাহকে মাদ্রাসা থেকে এক মাস আগে বের করে দেওয়া হয়। সবকিছু মিলিয়ে বাবুনগরীর অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হন আনাসের ওপর। তাঁদের অভিযোগ, আহমদ শফী বয়স্ক হওয়ায় তাঁকে ভুল বুঝিয়ে আনাস এসব কাজ করিয়েছেন। এতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *