আবারও বন্যার কবলে কুড়িগ্রাম, পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সাড়ে ৩ হাজার পরিবার

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা- গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিমধ্যে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ উপজেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। এনিয়ে তৃতীয় দফা বন্যায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

 

তবে উপজেলা প্রশাসন ২৫শ পরিবার পানিবন্দির কথা জানালেও উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

 

পানিবৃদ্ধির কারণে প্লাবিত এলাকার বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ চরমে গিয়ে পৌঁছেছে। এতে করে গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মূরগিসহ বানভাসীরা বেড়ী বাঁধ, উচু রাস্তা কিংবা ওয়াপদা বাধেঁ আশ্রয় নিয়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের।

 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল, চর পেচাই, বস্তী গোরকমন্ডল, ঝাউকুিিট, পশ্চিম ফুলমতি, কিশামত শিমুলবাড়ী, যতিন্দ্র নারায়ন, সোনাইকাজি, রোশন শিমুলবাড়ী, কবিরমামুদ, প্রানকৃঞ্চ, জোৎকৃঞ্চকরি, চর বড়লই, বাংলাবাজার, বড়ভিটা, চর ধনিরাম, ধনিরাম, খোচাবাড়ী, চর খোচাবাড়ী, রাঙ্গামাটি, ভাঙ্গামোর এলাকাসহ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

 

বড়ভিটার পাশে সারোডোব এলাকায় প্রবল পানির স্রোতে ধরলার বেড়ীবাধঁ ভেঙ্গে হুহু করে কাদা মিশ্রিত বন্যার পানি প্রবেশ করছে। ওই এলাকার রোপা আমন ক্ষেত ৭ শত হেক্টর, সবজি ৫০ হেক্টর, মাশকলই ২০ হেক্টর ও কলাসহ প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ।

 

কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত ২৪ ঘন্টায় ১২৮ মিলি মিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী তিন থেকে চার দিন আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।

 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

সার্বক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বানভাসিদের খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। আপাতত পানিবন্দিদের জন্য জি আর এর কোন বরাদ্দ নেই। তবে পানিবন্দি ২৫শ পরিবারের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *