নজর২৪ ডেস্ক- দেশের সবচেয়ে বড় কওমি মাদ্রাসা চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে এই আন্দোলন করছেন তারা।
বুধবার দুপুর থেকে মাদ্রাসার ভেতরে মাঠে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আল্লামা শফী বর্তমানে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তার এই অসুস্থতার সুযোগে কোনো নিয়মনীতি না মেনেই হাটহাজারী মাদরাসা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করছেন আনাস মাদানী। এছাড়া হাটহাজারী মাদরাসা, হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদরাসা বোর্ডের (বেফাক) ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আল্লামা শফী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে মাদরাসার প্রশাসনিক তদারকিতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। একাধিকবার তাকে দেশে বিদেশে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নিজের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় আল্লামা শফী দাফতরিক কাজে ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই সুযোগে মাওলানা আনাস মাদানী হেফাজতে ইসলাম ও হাটহাজারী মাদরাসায় নিজের বলয় বাড়াতে তৎপরতা শুরু করেন।
সূত্র জানায়, আল্লামা শফীর প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদকে কোনো নোটিশ ছাড়াই দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর থেকেই আনাস মাদানীর প্রভাব, মাদরাসার ভেতরে প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয়গুলো আলোচনায় আসে।
মাওলানা আনাস মাদানীর প্রভাবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই কমপক্ষে ১১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বিনা কারণে মৌখিক নির্দেশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
এরই পেক্ষিতে বুধবার জোহরের নামাজের পর থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলন চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানীর রুমে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় আনাস মাদানী মাদ্রাসার বাইরে ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আন্দোলনের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য হাটহাজারী মাদ্রাসার গেইটের বাইরে অবস্থান করছে। মাদ্রাসার গেইট বন্ধ থাকায় তারা ভেতরে ঢুকতে পারছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষকরা বৈঠকে বসেছেন।