খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ল

নজর২৪, ঢাকা- আগের শর্তগুলো অপরিবর্তিত রেখেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে।

 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে আসা এই আবেদনে অনুমোদন দেন।’

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এর আগে আইন মন্ত্রণালয়ও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য আইনগত সুপারিশ করেছিল। করোনার কারণে গত ছয় মাস খালেদা জিয়ার পরিবার তার কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেনি। এই বিবেচনায় তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।’

 

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা-২ শাখার উপসচিব মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয় বেগম খালেদা জিয়া’র দণ্ডাদেশ শর্ত সাপেক্ষে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য নির্দেশক্রমে স্থগিত করা হলো। এ সময় বেগম জিয়া ঢাকাস্থ নিজ বাসা থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময়ের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

 

এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করে আইন মন্ত্রণালয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ওই দিন বলেন, খালেদা জিয়া এই সময়ে বিদেশে যেতে পারবেন না। দেশে থেকে বাসায় চিকিৎসা নেবেন। এই শর্তে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আরও ছয় মাসের জন্য এই মুক্তির মেয়াদ কার্যকর হবে।

 

এর আগে সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। যার মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। তার আগে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিলো।

 

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া এখন গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন।

 

উল্লেখ্য, জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর তাকে নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। এরপর গত ৩০ অক্টোবর এই মামলার আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

 

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন একই আদালত। রায়ে অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখানে কয়েকদফা চিকিৎসা চলে তার। তার মুক্তির জন্য বিএনপি নেতারা লাগাতার দাবি জানিয়ে আসছিলেন এবং আইনি লড়াই চালাচ্ছিলেন।

 

শেষ পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তির আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে দণ্ড স্থগিত করে ছয় মাসের মুক্তি দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে, যার মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *