আন্তর্জাতিক ডেস্ক- ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতার ঘটনায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক সদস্য উমর খালিদকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। গোটা ঘটনায় উমরকে অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। ‘বেআইনি কার্যকলাপ নিরোধক আইনে’ (ইউএপিএ) মুসলিম এই ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী দিল্লিতে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থক ও বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার রূপ নেয়। সংঘর্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয় এবং ৫৮১ জন আহত হন। মৃত ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৭ জনের শরীরে বন্দুকের গুলির ক্ষতও ছিল।
দিল্লি সহিংসতার তদন্তে বেশ কিছু দিন ধরেই দিল্লি পুলিশের নজরে ছিলেন উমর খালিদ। শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন, সেখানে তিনি উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে গত ১ আগস্টও উমরকে এক দফা জেরা করে পুলিশ।
তারপর রোববার ফের উমর খালিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সকাল থেকে টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর, এদিন তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।
পুলিশের দাবি, আম আদমি পার্টির (আপ) সাবেক কাউন্সিলর তাহির হুসেনের সঙ্গে মিলে দাঙ্গার ষড়যন্ত্র কষেছিলেন উমর। এর আগে, গত ৩ আগস্ট তাহির জেরায় দাঙ্গায় নিজের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন বলে জানা গেছে।
দিল্লি সংহিসতার ঘটনায় গত ৬ মার্চ প্রথম উমর খালিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তাতে বলা হয়, উস্কানিমূলক ভাষণ দেয়ার পাশাপাশি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকাকালীন রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে দিল্লিবাসীকে ইন্ধন জোগান উমরই, যাতে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করা হচ্ছে, এমন বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দেয়া যায়।
যদিও দিল্লি পুলিশের আনা অভিযোগ সেইসময় অস্বীকার করেন উমর। ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। গত ৪ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমে উমর অভিযোগ করেন, দেশে এই মুহূর্তে দুধরনের আইন চলছে। শাসক দলের সমর্থকদের জন্য একটি, অন্যটি সাধারণ মানুষের জন্য, যারা সরকারের সমালোচনা করার সাহস দেখান।