নজর২৪ ডেস্ক- বিশ্বকে দিশেহারা করে দেওয়া করোনা ভাইরাসের প্রকোপে টানা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে বলতে গেলে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকা রাজনৈতিক দলগুলো ঘর থেকে বেরিয়ে আসার তত্পরতা শুরু করেছে।
প্রথমে জাতীয় সংসদের শূন্য হওয়া চারটি আসনে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাইছে দলগুলো। এরপর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে সারা দেশে দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম বিস্তৃত করার প্রস্তুতি চলছে। উল্লেখযোগ্য দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, করোনার মধ্যেও মূলত ইউপি নির্বাচনকে ঘিরেই সারা দেশে রাজনীতি আবার সরগরম হয়ে উঠবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছরের মার্চ থেকে কয়েক ধাপে শুরু হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় পরিধির ৪ হাজার ১০০টি ইউপির নির্বাচন আয়োজনে ইতিমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু করেছে ইসি। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইসি এই নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে পারে।
আইন অনুযায়ী, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় ইসি। এর আগে আগামী অক্টোবরে মামলার জটে আটকে থাকা দুই শতাধিক ইউপিতে উপনির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় ঐ বছরের ৪ জুন। আইন অনুযায়ী, কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
এবার দলীয় প্রতীকে ব্যালট পেপারের পাশাপাশি উপজেলা সদরের ইউপিগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে। আইন অনুযায়ী আগামী বছরের ২১ মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে।
গতকাল নির্বাচন কমিশন স্থগিত পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার তিনটি, ভোলার লালমোহনের একটি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নে ভোট হবে আগামী ২০ অক্টোবর। অক্টোবর জুড়েই স্থগিত বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে পরিষদের মেয়াদের বিষয়ে বলা হয়েছে- “কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, …সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হতে পাঁচ বছর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।”
পরিষদের নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে- “পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।”
আইনে উল্লেখ রয়েছে- “দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবধি কোন কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত, যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে।”
স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, নভেম্বর থেকে যেসব নির্বাচনের সময় হবে তা করা হবে। তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে স্থগিত নির্বাচন শুরু হবে। আর নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে যখন যে নির্বাচন আসবে তা যথাসময়ে করা হবে।